পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনের কারণে যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়গুলোর পাশ দিয়েই পদ্মা প্রবাহিত হওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে এসব বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়গুলো বিলীন হয়ে গেলে ভাঙন কবলিত এলাকার প্রায় হাজার খানেক শিশু বঞ্চিত হতে পারে শিক্ষা থেকে। প্রাথমিকেই ঝরে পড়ার শঙ্কা রয়েছে দরিদ্র এসব শিশু শিক্ষার্থীর। জেলা শিক্ষা অফিস বলছে, ভাঙন কবলিত এলাকার বিদ্যালয়গুলো রক্ষার জন্য তাদের বিভাগীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে শিশুদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বিদ্যালয়গুলো অন্য কোথাও স্থানান্তর করার সুযোগ রয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, গোয়ালন্দের চাঁদ খানপাড়া ও বেথুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দু’টি নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া এ উপজেলা থেকে এর আগে ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে চর বেতকা, বড় সিঙ্গা, দৌলতদিয়া ঘাট ও বেতকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থানান্তর করা হয়েছে।
রাজবাড়ী সদরের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নৃপেন্দ্র নাথ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, সদর উপজেলায় চারটি বিদ্যালয় নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে মিজানপুর ইউনিয়নে চর সিলিমপুর ও মহাদেবপুর এবং বরাট ইউনিয়নের উরাকান্দা ও পূর্ব উরাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙনের কবলে পড়তে পারে।
তিনি আরো জানান, নদী ভাঙনের হাত থেকে এ বিদ্যালয়গুলো রক্ষার জন্য রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজবাড়ীর সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি একেবারে পদ্মা নদীর কূলে অবস্থিত। গত বছর নদী ভাঙন রক্ষা প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে কিছু বালুর জিও ব্যাগ ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এ বছর ভাঙন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষা করার জন্য কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। ফলে যে কোনো সময় বিদ্যালয়টি ভাঙনের শিকার হতে পারে।
চর সিলিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমান আলী ফকীর ও সহকারী শিক্ষক মো. মুকুল হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের বেশির ভাগই ভাঙন কবলিত এলাকার দরিদ্র মানুষের সন্তান। নদী ভাঙনের কারণে যদি স্কুলটি বিলীন হয়ে যায়, তাহলে এসব শিশু প্রাথমিকেই ঝরে পড়তে পারে। তাই আমরা আশা করছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন বিদ্যালয়টি ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
রাজবাড়ী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে আমি শুনেছি। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের করার কিছুই নেই। কারণ আমাদের বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যালয় ভাঙন রক্ষার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বিদ্যালয়গুলো স্থানান্তর করা সম্ভব। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু বিদ্যালয় স্থানান্তর করেছি।