পরিবেশ বিপন্নের কারণে বান্দরবানে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ছে।
বান্দরবানে নির্বিচারে পাহাড়, গাছপালা কাটা এবং অপরিকল্পিত জুম চাষের ফলে সেখানে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে অপরিকল্পিত বসতি স্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণের ফলে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনাও বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের সৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড় ধস তাৎক্ষণিক ঘটনা মনে হলেও এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার একটি ফসল।
এদিকে শনিবার (৬ জুলাই) থেকে বান্দরবানে অবিরাম ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কায় ঝুঁকিতে থাকা বসতি ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের তথ্যমতে, পাহাড় ধসে ২০০৬ সালে বান্দরবান জেলা সদরে মারা গেছে ৩ জন, ২০০৯ সালে লামা উপজেলায় মারা গেছে শিশুসহ ১০ জন, ২০১০ সালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মারা গেছে ৫ জন, ২০১১ সালে রোয়াংছড়ি উপজেলায় মারা গেছে ২ জন, ২০১২ সালে লামা উপজেলায় মারা গেছে ২৮ জন এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মারা গেছে ১০ জন, ২০১৩ সালে সদরের কালাঘাটায় মারা গেছে ২ জন, ২০১৪ সালে সদরে মারা গেছে ৪ জন, ২০১৫ সালে জেলা সদরের বনরুপাড়ায় মারা গেছে ৩ জন, লামা উপজেলার হাসপাতাল পাড়ায় মারা গেছে ৬ জন, ২০১৭ সালের জেলা শহরে মারা গেছে শিশুসহ ৬ জন এবং ২০১৮ সালে নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধসে মারা গেছে ৩ জন এবং লামায় সরই ইউনিয়নে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়।
বান্দরবানের মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুর ইসলাম জানান, শনিবার ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার সকাল থেকে বান্দরবানে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের শঙ্কা বাড়ছে। বৃষ্টির অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আরও দু’একদিন থাকবে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. ইসলাম বেবী জানান, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পাহাড় ধস এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রাণহানি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।