ফেনী সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে প্রথম বর্ষ থেকেই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা উত্ত্যক্ত করত বলে আদালতকে জানিয়েছেন নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।
সোমবার (৮ জুলাই) নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে নুসরাতের ছোট ভাই সাক্ষ্য ও জেরা চলাকালে আদালতকে এ কথা বলেন।
তার সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রের গার্ড বেলায়েত হোসেন ও সোনাগাজী বাজারের ওষুধ দোকানদার জহিরুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হবে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এম. শাহজাহান সাজু মুঠোফোনে বার্তা২৪.কম-কে জানান, নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান আদালতকে জানিয়েছে, সিরাজ উদ দৌলা আলিম প্রথম বর্ষ থেকে নুসরাতকে ডিস্টার্ব করত।
নিহত নুসরাতের উদ্ধৃতি দিয়ে ছোট ভাই রাশেদুল হাসান আদালতকে আরও জানায়, পরীক্ষাকেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে বোরকা পরা চারজন লোক তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। মৃত্যু শয্যায় নুসরাত রাফি এ কথাগুলো বলে গেছেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আরও জানান, সকাল ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ পর্যন্ত আটজনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। এর আগে রোববার (৭ জুলাই) তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই এ মামলার সাক্ষী কার্যক্রম চলছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার নামে থানায় অভিযোগ করা হয়। পরে পুলিশ মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে আটক করে। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।
এই হত্যা মামলায় ১৬ জনকে আসামি করে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বর্তমানে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।