অবিরাম ভারী বর্ষণে বান্দরবানের প্রধান সড়কের কয়েকটি স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সারাদেশের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
অব্যাহত বর্ষণে বান্দরবান-কেরানীহাট প্রধান সড়কের বাজালিয়া, বরদুয়ারাসহ তিনটি পয়েন্ট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়ক ডুবে যাওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রাম, ঢাকা, কক্সবাজারসহ সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বান্দরবান শহর থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো যাত্রীবাহী বাস।
বাজালিয়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ নাজিম, আব্দুল খালেক জানান, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটি যেন এ অঞ্চলের মানুষের নিয়তি। এতে দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই। সড়কটি উঁচু করার জন্য কয়েকদফায় উদ্যোগ নেয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি আজও।
জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ায় থানচিতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে জিননা পাড়া এলাকায় আটকা পড়েছে ১৬ জন পর্যটক।
প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা জানায়, গত শনিবার থেকে বান্দরবানের ৭টি উপজেলায় অবিরাম ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। তবে আগের চেয়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮৫ মিলিমিটার।
এদিকে টানা বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে বান্দরবানের নিম্নাঞ্চল। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো থেকে লোকজনদের বসতি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র অথবা নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রশাসন, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় খোলা হয়েছে ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। এতে অবস্থান নিয়েছে প্রায় সাড়ে ৬শ দুর্গত মানুষ।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।