হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বাজারহাটির শহীদ উল্লাহ্ হাজীর পুকুরের পাড়ে ছেঁড়া পলিথিন ও খড়কুটু দিয়ে তৈরি ঝুপড়ি ঘরে বাস করেন শাহারা আক্তার। এক সময় সুখের সংসার থাকলেও আজ তিনি একা, নিঃস্ব। ২০ বছর আগে হারিয়েছেন স্বামীকে। আর দুই ছেলে থাকলেও খোঁজ নেন না মায়ের। এমনকি ছেলেরা কোথায় থাকে সেটাও জানেন না শাহারা আক্তার।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার শরীফপুর গ্রামের আক্তার হোসেনের সাথে বিয়ে হয় শাহারা আক্তারের। বিয়ের পর ঘর আলো করে আসে দুই ছেলে। তবে বিয়ের ১০ বছরের মাথায় মারা যান আক্তার হোসেন। পরে অন্যের বাড়িতে কাজ করে অনেক কষ্ট করে দুই ছেলেকে বড় করেন। কিন্তু এখন সেই সন্তানরাই তার (শাহারা আক্তার) খোঁজ নেন না।
এদিকে, স্বামীহারা ও সন্তান পরিত্যক্ত হওয়ার পর কয়েক বছর আগে শরীফপুর ছেড়ে লাখাই চলে আসেন। সেখানে বিভিন্ন বাড়িতে খাবারের বিনিময়ে কাজ শুরু করেন। উপজেলার বাজারহাটি গ্রামের শহীদ উল্লাহ্ দয়া করে পুকুর পাড়ে থাকার জায়গা দেন। সেখানে ছেঁড়া পলিথিন ও খড়কুটু দিয়ে তৈরি ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করেন তিনি। যদিও বৃষ্টিতে ঝুঁপড়ি ঘরে পানি পড়ে বাসের অযোগ্য হয়ে যায়।
তবে অসহায় হয়েও কোনো সহযোগিতা পান না শাহারা আক্তার। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে হয়রান তিনি। কারণ তিনি স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটার না। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারের পুনর্বাসন ও সহযোগিতা থেকে।
শাহারা আক্তার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘বয়স হয়েছে, ঠিকভাবে কোনো কাজ করতে পারি না। শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বানছে। এরপরও মানুষের বাড়িতে কাজ করা লাগে। কাজ না করলে কে খাবার দেবে?’
তিনি বলেন, ‘স্বামী মারা যাওনের পর দুই পুলারে (ছেলেকে) অনেক কষ্ট করে মানুষ করছি। কিন্তু এখন আমার পুলারা কোনো খবর নেয় না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. শওকত আকবর বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘তিনি এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা বা ভোটার না। তাই তাকে বিধবা ভাতা বা অন্যান্য সহযোগিতা করা সম্ভব না। তবে বিভিন্ন সময় সাধ্যমতো তাকে চাল-ডাল দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।’