গাইবান্ধায় বাড়ছে ব্রহ্মপুত্রের পানি, ভাঙনের কবলে রায়দাসবাড়ী

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, গাইবান্ধা | 2023-09-01 09:32:03

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে করতোয়া তিস্তা, ঘাঘট ও যমুনাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। বেশ কিছু বসতবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী গোঘাট গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে পানি উঠেছে। সোলেমান, আকবর, তমছের, ফয়জার ও কাইচমতি বেওয়াসহ অনেকের ঘরের মেঝেতে হাঁটু পানি জমেছে।

এদিকে, তীব্র স্রোতের কারণে রায়দাসবাড়ী গ্রামটিতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদের গর্ভে চলে গেছে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ ভিটে মাটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে তাদের আত্নীয়-স্বজনের বাড়িতে। নদের অব্যাহত ভাঙনে ওই এলাকার জিইউকে সংস্থা পরিচালিত একটি স্কুল বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে আরো অর্ধশত ঘরবাড়ি। সব মিলে ভাঙন আতঙ্কে দিন-রাত কাটছে রায়দাসবাড়ী গ্রামের মানুষের। আবাসন, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে পড়েছেন তারা।

ঘরে পানি উঠেছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

অপরদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙন ও বন্যা কবলিত ভাটী কাপাসিয়া, লালচামার, লালচামার গুচ্ছ গ্রাম, আশ্রয়ন কেন্দ্র-২, পাগলার চর, কাজিয়ার চর, কালাইসোতার চর, শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর (পুটিমারী), পোড়ার চর ও হরিপুর ইউনিয়নের লখিয়ার পাড়া, চরচরিতা বাড়ি, কানি চরিতাবাড়ি, চর মাদারীপাড়া, রাঘব, পাড়া সাদুয়াসহ বিভিন্ন পরিদর্শন করেন। এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ভরতখালি, হলদিয়া ও ফুলছড়ির কঞ্চিপাড়া, গজারিয়া, উড়িয়া, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গোঘাট গ্রামের পানিবন্দী সোলেমান ও কাইচমতি বেওয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, কয়েকদিন ধরে তাদের ঘরে পানি জমে আছে। তবে এখনও তারা কারো কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি।

ভাঙন শুরু হয়েছে রায়দাসবাড়ী গ্রামে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদ-নদীর ভাঙন ঠেকাতে এরই মধ্যে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ঘরহারা লোকজনের আবাসনের জন্য ঢেউটিন দেওয়া হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর