পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা

নেত্রকোনা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়ন্টিফোর.কম, নেত্রকোনা | 2023-09-01 06:08:08

ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণে নেত্রকোনার সোমেশ্বরী, কংস, ধনু এবং উব্দাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে অবনতি হয়েছে জেলার বন্যা পরিস্থিতি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

শনিবার (১৩ জুলাই) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কলমাকান্দা, বারহাট্টা ও দুর্গাপুর উপজেলার মোট ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৫টি ইউনিয়নের তিন শতাধিক গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ওইসব গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এদের মধ্যে অন্তত ছয় শতাধিক পরিবারের বসতঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় তারা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

বন্যায় গ্রামবাসীরা রাস্তা পারাপারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে

  

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুল ইসলাম বার্তাটোয়ন্টিফোর.কম-কে বলেন, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে আরও ত্রাণ আসবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) জেলা সদর থেকে নতুন আরও ত্রাণ পাঠানো হবে।

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন করে ৩০ মেট্রিক টন চাউল ও আরও ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

 হাঁটু পর্যন্ত পানি পেরিয়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছেন গ্রামবাসীরা 

 

এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চাল ও শুকনো খাবারের প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। তবে বন্যা কবলিত এলাকার জন্য এই ত্রাণ যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ করেছে বন্যার্তরা।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নিজ নিজ কর্মস্থলে থেকে বন্যার্তদের সেবা দিতে স্থানীয় প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতভর বৃষ্টিতে দুর্গাপুরের গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কুল্লাগড়ায় নদী ভাঙ্গন হয়েছে। এতে কুল্লাগড়ার পুরো ইউনিয়ন হুমকিতে পড়েছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে বালির বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। এছাড়া বারহাট্রার বাউশি ইউনিয়নের পাশাপাশি নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আসমা ও সাহতা ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম।

গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় এখন নৌকায় পারাপারের একমাত্র মাধ্যম

 

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আক্তারুজ্জামান বার্তাটোয়ন্টিফোর.কম-কে বলেন, উব্দাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। সোমেশ্বরী ও কংশের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গাপুরের বিজিবি ক্যাম্প, লোকনাথ আশ্রমসহ কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বালির বস্তা দিয়ে ওই সব ভাঙ্গন রোধে চেষ্টা করা হচ্ছে।

রাতভর বৃষ্টিতে দুর্গাপুরের গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে

 

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম বার্তাটোয়ন্টিফোর.কম-কে বলেন, বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে এলাকায় মেডিকেল টিম ও স্বাস্থ্য সহকারী কাজ করছেন। স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে প্রয়োজনীয় ওষুধও দেয়া হয়েছে । বন্যা কবলিত এলাকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সকারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর