পাবনার ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা মামলার রায়ে সাজাপ্রাপ্ত আরও আট পলাতক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে আসামিরা জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলী তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিদের মধ্যে পাঁচজন যাবজ্জীবন ও তিনজন ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। এ নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত মোট ৪০ জন আসামি জেলহাজতে রয়েছে। এ মামলায় এখনও পলাতক রয়েছে সাতজন। আর মারা গেছে পাঁচজন। পলাতকদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জাকারিয়া পিন্টু এখনো পলাতক।
আত্মসমর্পণকারী আসামিদের মধ্যে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ঈশ্বরদীর পশ্চিমটেংরী পিয়ারাখালী গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে আমিরুল ইসলাম ওরফে আমিন, পশ্চিমটেংরী ব্লাকপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো: রবি, একই এলাকার মৃত পিয়ার আলীর ছেলে আজাদ হোসেন ওরফে খোকন, ব্লাকপাড়া পিয়ারাখালী এলাকার জালাল গার্ডের ছেলে মামুন, যুক্তিতলা গ্রামের মৃত জয়েন উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম।
১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চরমিরকামারী গ্রামের মৃত জামাত আলী সরকারের ছেলে চাঁদ আলী, পশ্চিমটেংরী বাবুপাড়া এলাকার মহসিন রিয়াজীর ছেলে রনো, চরসাহাপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান সরদারের ছেলে হুমায়ুন কবির ওরফে দুলাল।
এদের মধ্যে মৃত পিয়ার আলীর ছেলে আজাদ হোসেন ওরফে খোকন অন্য একটি মামলায় পূর্বে থেকে জেলহাজতে রয়েছেন। তিনিও এ মামলার যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত দুই নম্বর আসামি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. আখতারুজ্জামান মুক্তা জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রায়ের সার্টিফাই নকল কপি তুলে নির্ধারিত একমাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মাসুদ খন্দকার জানান, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। আসামীদের পক্ষে খুব শীঘ্রই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনবহরে গুলি ও বোমা হামলা চালানো হয়।
এ মামলার রায়ে গত ৩ জুলাই ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডন্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।