আম দিবি না কেস খাবি?

লালমনিরহাট, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, লালমনিরহাট | 2023-08-28 20:11:16

রংপুরের পদাগঞ্জ থেকে একটি পিকআপভ্যানে ৫২ ক্যারেট হাড়িভাঙা আম নিয়ে কুড়িগ্রাম যাচ্ছিলেন চালক ফারুক আহমেদ। পথে তার গাড়ি থামান এক ট্রাফিক সার্জেন্ট। গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে দেখেও গাড়িটি ছেড়ে না দিয়ে ২০ কেজি আম চেয়ে বসেন তিনি।

জোর করে সেই আম নিয়েও নেন ট্রাফিক সার্জেন্ট ফরিদ আহমেদ। গাড়ি চালক এমন অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় গাড়ির লুকিং গ্লাস ভাঙা দেখিয়ে একটি মামলাও ঢুকে দেন সার্জেন্ট।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের লালমনিরহাট সদর উপজেলার সেলিমনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

“আম দিবি, না কেস খাবি?” ট্রাফিক সার্জেন্টের এমন হুমকির জবাবে গাড়ি চালক ফারুক বলেন, “স্যার, আমের মালিক আমি না, আমি গাড়ি চালক। হিসাব অনুযায়ী আম পৌঁছে দিয়ে আমার ভাড়ার টাকা নিতে হবে।”

চালক ফারুক জানান, “আমি যখন কঠোর প্রতিবাদ করি তখন আমাকে উঠায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন সার্জেন্ট। আমি গাড়ির মালিককে ফোন দিতেই তিনি মামলা দিয়ে দেন।”

আমের মালিক কুড়িগ্রাম পৌর বাজারের ফল ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “গাড়ির ড্রাইভারের কাছ থেকে আম নিয়েছে, আমের দাম ড্রাইভারই আমাকে দেবে। আমি গাড়ির সাথে ছিলাম না। গাড়ির চালকের কাছে চালান ছিল আর সে মোতাবেক আম বুঝিয়ে দিলে তার ভাড়া পরিশোধ হবে।”

গাড়ির ড্রাইভারের কাছে বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান পিকআপভ্যানটির মালিক আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, “একজন চালকের কাছ থেকে জোর করে আম নিয়ে নেবে আর তার দাম মিটাবে ড্রাইভার—এটা সত্যিই দুঃখজনক। জোর যার মুল্লুক তার!”

ট্রাফিক সার্জেন্টের আম নেওয়ার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে সমবেত হতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই ট্রাফিক সার্জেন্টসহ ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তড়িঘড়ি করে এলাকা ছেড়ে চলে যান বলে জানান স্থানীয়রা।

অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট ফরিদ আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে জোর করে আম নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, “গাড়ি চালকের কাছ থেকে ১ হাজার টাকায় ১৫ কেজি আম কিনে নিয়েছি, জোর করে কিছু নেইনি।”

গাড়িটিকে মামলা দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, “গাড়ির চালক খারাপ ব্যবহার করায় এই ছোট মামলাটি দিয়েছি মাত্র।”

এ সম্পর্কিত আরও খবর