নদী থেকে উত্তোলিত পলি ফেলার জায়গা সংকটের কারণে বাগেরহাটের মংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলের খনন কাজ প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চ্যানেলটির মংলা ও রামপাল অংশের প্রায় ২৬ কিলোমিটার নদীর দু’পাড়ের জায়গা ভরাটের পর এখন নতুন করে পলি ফেলার আর কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই।
সোমবার (১৫ জুলাই) বিআইডব্লিউটি-এর ড্রেজিং বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনিচ্ছুজামান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মংলা-ঘাষিয়াখালী নৌ চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখতে পর্যন্ত ২৭৭ দশমিক ৪৬ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন করা হয়েছে। মাটি নদীর দু’পাড়েই ফেলা হয়েছে। একই জায়গায় একাধিকবার এ মাটি ফেলায় উঁচু টিলার সৃষ্টি হয়েছে। যা যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিনা মূল্যে মাটি দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েও কোন জায়গা পাচ্ছেন না তারা।
এদিকে নদীর নাব্যতা সংকটে দূরীকরণে বিআইডব্লিউটি-এর চলমান কার্যক্রমকে বাঁধাগ্রস্ত করতে একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল নানা ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিআইডব্লিউটির কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১০ সালে চ্যানেলটির ২২ কিলোমিটার নৌপথ পলি পড়ে ভরাট হয়ে নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১ জুলাই ২৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া চ্যানেলটির পলি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করে পুনরায় চালু করা হয়। তারপর থেকেই নিয়মতিভাবেই চলছে এ চ্যানেলটির খনন কাজ। কিন্তু দ্রুত পলি পড়তে থাকায় বর্তমানে খননকৃত মাটি ফেলার জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ চ্যানেলের দুই পাড়ে খননকৃত মাটি ফেলতে ফেলতে আর কোন জায়গা অবশিষ্ট নেই।
একইসঙ্গে পলি মাটি দিয়ে নদীর দু’পাড়ের নিচু জমি ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষি ও শিল্পায়ন সৃষ্টির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জমির দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।
মংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, আন্তর্জাতিক এ নৌ চ্যানেলটি পুনরায় চালু হওয়ায় মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি গুরুত্ব বেড়েছে। স্থায়ীভাবে এ চ্যানেলটির নাব্যতা ঠিক রাখতে পারলে অর্থনৈতিকভাবেও বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী গোলাম মোহাম্মদ কাকন বলেন, চ্যানেলে খনন কাজে বাধার সৃষ্টি হলে নৌ চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই চ্যানেলটি চালু রাখতে সরকারের সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বিআইডব্লিউটি-এর ড্রেজিং বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জাবের হোসেন মজুমদার বলেন, মংলা-ঘাষিয়াখালী নৌ চ্যানেল খননের মাটি দিয়ে কয়েক’শ একর সরকারি বেসরকারি জমি ভরাট করা হয়েছে।