ভুঞাপু‌রে ৪০ গ্রা‌মের মানুষ পা‌নিব‌ন্দি

টাঙ্গাইল, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, টাঙ্গাইল | 2023-08-31 15:05:53

টাঙ্গাই‌লের ভুঞাপু‌রে পাঁচ‌টি ইউ‌নিয়‌নের ৪০ গ্রা‌মের মানুষ পা‌নিব‌ন্দি হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছেন। যমুনা নদী‌র পা‌নি বাড়ায় বন্যার্ত এসব গ্রামে খাদ্য ও সুপেয় পা‌নির ত‌ীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) উপ‌জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঘরবা‌ড়ি‌তে পা‌নিতে নিমজ্জিত থাকায় গরু-ছাগল ও প‌রিবার নি‌য়ে অনেকেই উচু প্রাথ‌মিক বিদ্যালয়গু‌লোতে আশ্রয় নি‌য়ে‌ছেন। উপ‌জেলার সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩০টি স‌রকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হ‌য়ে‌ছে।

টাঙ্গাই‌লের পা‌নি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ভুঞাপুর উপ‌জেলায় যমুনা নদীর পা‌নি বিপদসীমার ৭২ সে‌ন্টি‌মিটার ওপর দি‌য়ে প্রবাহিত হ‌চ্ছে। আরও দুইদিন যমুনার পা‌নি বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে, উপ‌জেলার গো‌বিন্দাসী ইউ‌নি‌য়‌নের চারটি গ্রাম, নিকরাইল ইউ‌নিয়‌নে আটটি, গাবসারা ইউ‌নিয়‌নে ছয়টি, অর্জুনা ইউনিয়‌নে ১৮টি ও ফলদা ইউ‌নিয়‌নের তিন‌টি গ্রা‌মের মানুষ পা‌নিব‌ন্দি হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছেন। এর আগে গত ক‌য়েক‌দি‌নের নদীভাঙ‌নে উপ‌জেলার গো‌বিন্দাসী ইউনিয়‌নের তিন‌টি গ্রা‌মে শতা‌ধিক পরিবার গৃহহারা হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। ক‌য়েক‌ গ্রা‌মের ভাঙ‌নে ফসলি জ‌মি নদীগ‌র্ভে চ‌লে গে‌ছে।

ভাঙন ও বন্যার কার‌ণে দি‌শেহারা মানুষ মানব‌বেতর জীবন যাপন কর‌ছেন। জায়গাসহ ঘরবা‌ড়ি হা‌রি‌য়ে বহু মানুষ নিঃস্ব হ‌য়ে গেছেন। তাদের অনেকেই খোলা আকা‌শের নি‌চে বসবাস করছেন। অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বা‌ড়ি‌তে আশ্রয় নি‌য়ে‌ছেন।

ভাঙনকব‌লিত মানু‌ষের অভিযোগ, ভাঙন‌রো‌ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়‌নি পাউবো। সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করলে কাউকে বা‌ড়িছাড়া হতে হতো না। আঘাত হান‌তে পার‌তো না প্রমত্তা যমুনা।

স্থানীয় গাবসারা ইউনিয়ন প‌রিষ‌দের চেয়ারম্যান মু‌নিরুজ্জামান ম‌নির জানান, এই ইউনিয়ন পু‌রোটাই চরাঞ্চল। বন্যার কার‌ণে পু‌রো ইউনিয়‌নের ৫০টি গ্রা‌মে পা‌নি ঢুকেছে। এতে বেশ ক‌য়েক‌টি গ্রাম পু‌রোপু‌রি ত‌লিয়ে গে‌ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধর‌নের ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যায়‌নি।

উপ‌জেলা মাধ্যা‌মিক শিক্ষা কর্মকর্তা শা‌হিনুর ইসলাম জানান, বন্যাকব‌লিত এলাকার বিদ্যালয়গু‌লো বন্ধ রাখা হ‌য়ে‌ছে।

উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, বন্যাকব‌লিত মানুষ‌দের সহ‌যো‌গিতার জন্য সব ধর‌নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হ‌য়ে‌ছে। চি‌কিৎসা‌সেবার জন্য মোবাইল টিম গঠন করা হ‌য়ে‌ছে।

টাঙ্গাইল পাউবো’র বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে টাঙ্গাইলের যমুনা, পুংলী, ঝিনাই, বংশাই ও ধলেশ্বরীর পানিতে পানি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৭২ সে.মি., ধলেশ্বরী নদীর দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ব্রিজের এখানে বিপদসীমার ৮৯ সে.মি. এবং ঝিনাই নদীর কালিহাতী উপজেলার যোকারচর এলাকায় বিপদসীমার ৪৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বাকি দু’টি নদী পুংলী ও বংশাই নদী বিপদসীমার নিচে রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর