বন্যা কবলিত এলাকায় নৌযান সংকট চরমে

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-08-10 19:42:57

গাইবান্ধা থেকে: গত দুই সপ্তাহের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে অস্বাভাবিকহারে পানি বেড়েছে ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীতে। নদীর বুক উঁচিয়ে প্লাবিত হয়েছে গাইবান্ধা জেলার বহু চর চরদীপ ও নিম্নাঞ্চল। হু হু করে পানি বাড়ায় এখন শহরের অলিগলিও হাঁটু পানির নিচে। এতে করে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ভেঙ্গে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় গাইবান্ধার বন্যা কবলিত মানুষের পাশে ত্রাণ পৌঁছে দিতে নৌযানের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে করে দুর্গম এলাকায় পানিবন্দী মানুষদের হাতে প্রশাসনের ত্রাণ পৌঁছানো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয় বন্যাকে ঘিরে নৌযান ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছেন।

গাইবান্ধার সাত উপজেলার এক লাখ পরিবারের অন্তত সাড়ে ৪ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। এ সব মানুষদের মধ্য থেকে ১৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেয়েছে মাত্র ৬১ হাজারের মতো মানুষ।

বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হওয়ায় চলাচলের জন্য ছোট-বড় ডিঙ্গি নৌকার কদর বেড়েছে। এদিকে নৌযান সংকটের কারণে বন্যার পানিতে ডুবে থাকা গ্রামে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সহযোগিতা ও ত্রাণ সহসাই পাচ্ছেন না পানিবন্দী মানুষ। আবার কোথাও কোথাও নৌযান ব্যবসায়ীরা বন্যা কবলিত দুর্গম এলাকায় যেতে নারাজ বলে জানা গেছে।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নে তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মসজিদ-মাদরাসা সবই এখন পানির নিচে। অথৈ পানিতে ডুবে আছে দীর্ঘদিনের চেনা পথঘাটও। এই ইউনিয়নের আনন্দবাজারে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর সঙ্গে কথা হয় নৌকা চালক লালন মিয়ার। ইঞ্জিনচালিত নৌকার এই চালক বালাসীঘাট যেতে ৪ হাজার টাকা দাবি করেন।

হঠাৎ ভাড়া বেশি চাওয়ার যুক্তি হিসেবে বলেন, সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মতো অশান্ত হয়ে উঠেছে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব চরাঞ্চল নদী এলাকায় যেতে হচ্ছে। অন্য নৌকা চালকরাও যেতে চাচ্ছেন না। তাই মালিকের হিসেব মতো ভাড়া বেশি।

আনন্দবাজারের পাশে গলাকাঁচি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে কথা হয় আনসার আলীর সাথে। সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধ জানান, তিন দিন ধরে অসুস্থ থাকার পরও নৌযান সংকটের কারণ এই শহরে যেতে পারছেন না তিনি।

এদিকে জেলা প্রশাসনের দাবি নৌযান সংকট থাকলেও পানিবন্দী মানুষদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। দুর্গতদের ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে। যা বিতরণ চলমান থাকবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর