কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে পানির তীব্র স্রোত ঢুকে পড়েছে উঁচু রাস্তায়। ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। এতে নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় রাস্তার উপর ঠাঁই নেয়া বন্যা কবলিত এলাকার মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) দুপুরে চিলমারী উপজেলার বালাবাড়ি ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া গ্রামে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদীর চিলমারী পয়েন্টের আশপাশের গ্রামসহ চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলে গতকালের চেয়ে পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। আজ সেখানে পানির প্রবাহ ১১৫ সেন্টিমিটারে এসেছে।
থানাহাট ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া এলাকার সোহবার হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে জুম্মাপাড়াসহ আশপাশের পাঁচটি গ্রামে। এখনও কিছু কিছু গ্রামে উঁচু রাস্তা ছাপিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে রাস্তার উপর আশ্রয় নেয়া মানুষরা নিরুপায় হয়ে শহরমুখী হচ্ছেন।'
ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে তিন কিলোমিটার দূরে রেডিও চিলমারী স্টেশন। সেখানেও পানি ঢুকে পড়েছে। এখানকার স্টেশন মাষ্টার বশির আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, উজানের ঢল আর অন্যান্য নদ-নদীর পানি ব্রহ্মপুত্রে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এখানকার রাস্তাঘাটও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। মানুষ, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে রাস্তার উপর কোন রকমে অবস্থান করছিলো। কিন্তু সকাল থেকে রাস্তার উপর পানির প্রবল স্রোতে উঠলে সবাই বিপদে পড়েছে।
সূত্রে জানা যায়, চিলমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৭৫টি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বর্তমানে এখানে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গত এক সপ্তাহে পানিতে ডুবে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। পানিবন্দি হওয়ায় ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।