টাঙ্গাই‌লে বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা

টাঙ্গাইল, দেশের খবর

অ‌ভি‌জিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, টাঙ্গাইল | 2023-08-31 10:02:37

যমুনা নদীর টাঙ্গাইল অংশে গত কয়েকদিনে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেলেও শুক্রবার  (১৯ জুলাই) সকাল থেকে কমতে শুরু করেছে। ফলে বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ-ব্যাধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।  এখনও পর্যন্ত বন্যা কবলিত এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। জেলা-উপজেলা প্রশাসন থেকে পানীয় জল ও কোন প্রকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশে যমুনা নদীর পানি দুই সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে শুক্রবার বিকালে ওই অংশে যমুনা নদী পানি বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির ফলে তারাকান্দি-ভূঞাপুর সড়কে টেপিবাড়ি নামকস্থানে ভেঙে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত ওই সড়কটির ৬০ মিটার অংশ ধসে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাতে সড়কটি ভেঙে পড়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল সড়কটি মেরামতে কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, শনিবার (২০ জুলাই) সকাল পর্যন্ত বন্যায় জেলার ৬টি উপজেলার নদী তীরবর্তী ৩৪টি ইউনিয়নের ২১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে প্রায় তিনলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

উপজেলাগুলো হচ্ছে- টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, গোপালপুর, কালিহাতী, নাগরপুর ও মির্জাপুর।

চলতি বন্যায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৩৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া ২১ হাজার ৯৭৪টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন হাজার ৩৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। চারটি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও জেলার ৬টি উপজেলার ১০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। ১৬টিতে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের সাহায্যার্থে জেলায় মোট ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ টি ভূঞাপুরে এবং ২ টি গোপালপুরে। এই সব আশ্রয় কেন্দ্রে দুই হাজার চারশ লোক আশ্রয় নিয়েছে। তবে বন্যা দুর্গত এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬৫ টন চাল ও নগদ তিন লাখ টাকা ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিনে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেলেও শুক্রবার বি‌কেল থেকে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে বন্যা কবলিত এলাকায় পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে পানি বাহিত রোগের প্রার্দুভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে।  এ বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর