প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত প্রবাহমান প্রমত্তা পদ্মা নদীর পানি। আর প্রতিদিন পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে যাচ্ছে জেলার চারটি উপজেলা পাংশা, কালুখালী, গোয়ালন্দ ও সদরের বেশ কয়েকটি গ্রাম।
এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে নতুন করে দেখা দিচ্ছে ভাঙন। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে কৃষকের আবাদি জমি, বসত-ভিটা ও বিভিন্ন স্থাপনা।
দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরিগুলোর চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। নদীতে তীব্র স্রোত প্রবাহিত হওয়ায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে নদী পার হতে। এতে করে ঘাট এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে শত শত যানবাহন।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রাজবাড়ীর তিনটি পয়েন্টের মধ্যে দুটি পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবার (২০ জুলাই) পদ্মার পানি দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ০.৬৬ সেন্টিমিটার ও পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ছিল ০.৫৫ সেন্টিমিটার ওপরে। আর সদরের মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১.০৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
রোববার (২১ জুলাই) তা বৃদ্ধি পেয়ে সকাল ৬টায় পরিমাপকৃত হিসাব অনুযায়ী দৌলতদিয়া পয়েন্টে ০.৬৮ সেন্টিমিটার ও পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে বিপদসীমার ০.৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে রাজবাড়ী সদরের মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গিয়ে শনিবার রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের নয়নসুখ গ্রামের ২০৬টি পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান সহ অন্য কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘রাজবাড়ীর বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। সর্বক্ষণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। তাছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং পানিবন্দি পরিবারের তালিকা করার কাজ চলছে।