কৃষকদের ক্ষতি পোষাতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ধান কেনার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্য ও সিন্ডিকেটের দাপটে তা ভেস্তে গেছে।
সিন্ডিকেটের ধান দিয়েই খাদ্য গুদাম ভরে গেছে। এতে কৃষি কার্ড থাকা সত্ত্বেও ধান বিক্রি করতে না পারায় অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
তবে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের বরাদ্দ অনুযায়ী সদর উপজেলায় ৯৫৭ মেট্রিক টন ধান কেনা শেষ হয়েছে। ফের বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হবে।
অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য, কৃষি ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিন্ডিকেটের লোকজনকে কৃষক সাজিয়ে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। পরে তাদের থেকেই গুদাম কর্তৃপক্ষ ধান কেনে। এতে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হন।
এদিকে কৃষকরা গুদামে ধান নিয়ে আসলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ধান আনা নেওয়াতে কৃষকের মোটা অংকের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ধান শুকানোর নামে পরদিন আসতে বলে কর্মকর্তারা কৃষকের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে। এতে ধান বিক্রি করতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে কৃষকদের।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের সামনে চররুহিতা, চরশাহী ও ভবানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা অর্ধ-শতাধিক কৃষককে কৃষি কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
কৃষক জয়নাল, আবুল খায়ের, সিরাজুল ইসলাম, বজলু মাঝি ও শফিক উল্যা জানান, শুকনো ধান নিয়ে বিক্রি করতে তারা গুদামে এসেছেন। কিন্তু কর্মকর্তারা ধান ভেজা বলে ফের শুকিয়ে আনার জন্য বলেছেন। ফের ধান শুকিয়ে আনলেও তাদের ধান কেনা হয়নি। তাদের দিয়ে ব্যাংক হিসাবও চালু করা হয়েছে। কৃষি কার্ডও রয়েছে।
জানা গেছে, সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে খাদ্য গুদামে এক হাজার ৩৫৮ জন কৃষকের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের থেকে মণ প্রতি এক হাজার ৫০ টাকা করে ৯৫৭ মেট্রিক টন ধান কেনার জন্য বরাদ্দ দেয় সরকার।
অধিকাংশ ধান সিন্ডিকেট থেকে কেনার অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। গত বছর কৃষকদের থেকে ধান না কেনায় সদর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তলব করেছিল।
লক্ষ্মীপুর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা সাহেদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকারের বরাদ্দ দেওয়া ৯৫৭ মেট্রিক টন ধান কেনা সম্পন্ন হয়েছে। ফের বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে। বরাদ্দ পেলে যেসব কৃষক ধান বিক্রি করতে পারেননি, তাদের থেকে কেনা হবে।’