বন্যায় রাজবাড়ীর চারটি উপজেলার তিন হাজারেরও বেশি পরিবারের ১০-১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তাদের। আর প্রশাসন বলছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে এবং তা বিতরণ করা হচ্ছে।
পানিবন্দী মানুষের তালিকা তৈরি করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবারসহ সরকারিভাবে দেড়শ’ মেট্রিকটন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।
পানিবন্দী মানুষগুলো এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। সরকারিভাবে যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, তা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য বলে দাবি করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রতনদিয়া ইউনিয়নের পানিবন্দী কয়েকজন বলেন, ‘সপ্তাহ খানেক ধরে পানি উঠেছে। এখনো ত্রাণ পাইনি। আমাদের গ্রামের যারা পেয়েছেন, তা খুবই সামান্য। আমাদের বলা হয়েছে, আমরাও নাকি পর্যায়ক্রমে পাব। তবে কবে পাব তা আমরা জানি না। আমাদের নাম নাকি লিখে নিয়ে গেছে।’
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘পাংশা, কালুখালী, গোয়ালন্দ ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। এতে পাংশায় ২৫০টি পরিবার, কালুখালীর রতনদিয়া ও কালকিাপুর ইউনিয়নের এক হাজার ৫৭৫ পরিবার, গোয়ালন্দের ৬০০ পরিবার ও সদরের ৯২১ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কালুখালী উপজেলার জন্য ৪৬.০৫০ মেট্রিকটন চাল, গোয়ালন্দের জন্য ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১২ মেট্রিকটন চাল এবং সদর উপজেলার জন্য ২১.০৪৫০ মেট্রিকটন চাল জেলা ত্রাণ ভান্ডার থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তা বিতরণও শুরু হয়েছে। অপরদিকে পাংশা উপজেলায় পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় এখনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। পানিবন্দী পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
এবারের বন্যায় ৯৩৫ হেক্টর আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণভাবে পানিতে তলিয়ে গেছে ২৪৯ হেক্টর ও আংশিক তলিয়ে গেছে ৬৮৬ হেক্টর জমির ফসল।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘জেলায় পানিবন্দী পরিবারগুলোর তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এরই মধ্যে আমরা শুকনা খাবার ও চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। বন্যা পরিস্থিতি আমরা সব সময় পর্যবেক্ষণ করছি। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করতে জেলা প্রশাসন প্রস্তুত আছে।’