সারাদেশে নৌ-যান শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবিতে ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলাতেও। নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চঘাট থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বেশ কয়েকটি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টার্মিনালে অপেক্ষা করেও মিলছে না গন্তব্যে যাওয়ার লঞ্চ।
নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৭০টি যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সহস্রাধিক বাল্কহেড ও পণ্যবাহী কার্গো চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে চাঁদপুরগামী ২০টি লঞ্চ সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে। আরো কয়েকটি রুটের লঞ্চও বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জসহ কয়েকটি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করলেও চাঁদপুর, মোহনপুর ও এখলাছপুরসহ অন্যান্য রুটে দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘটের সমর্থনে লঞ্চঘাটে সারিবদ্ধভাবে কয়েকটি লঞ্চ বেঁধে রাখা হয়েছে। তবে ধর্মঘট পালনকারী শ্রমিকদের লঞ্চঘাটে দেখা যায়নি।
লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। কোনো কোনো যাত্রী সুরেশ্বর ও বরিশাল যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ যাতায়াত করেও লঞ্চ পাচ্ছেন না। যাত্রীদের চোখে মুখে চরম ভোগান্তির ছাপ।
সকাল ৭টা থেকে লঞ্চ টার্মিনালে সপরিবারে বসে আছেন জাহিদ হোসেন। জাহিদ বলেন, ‘পরিবারসহ চাঁদপুর যাব। কিন্তু আইসা শুনি যে লঞ্চ বন্ধ। দুই ঘণ্টা যাবৎ বসে আছি ঘাটে।’
ব্যবসায়ী রায়হান মিয়া বলেন, ‘মোহনপুর যাব কিন্তু কোনো লঞ্চ নেই। ব্যবসায়ীক কাজে রোজ যাতায়াত করতে হয়। এ রকম থাকলে তো ভোগান্তির শেষ থাকবে না।’
এদিকে লঞ্চ শ্রমিকরা জানান, বর্তমান বেতনে তাদের সংসার চলে না। বার বার আন্দোলন করে বেতন বৃদ্ধির চুক্তি হলেও মালিকরা মানছেন না। বেঁচে থাকার তাগিদেই এই ধর্মঘট। দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তারা।
জেলা নৌ-যান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সবুজ সিকদার বলেন, ‘আমরা ১৪ দফা দাবি জানিয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।’
বাংলাদেশ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘চাঁদপুর বাদে বাকি সব অঞ্চলের লঞ্চ চলাচল করছে। চাঁদপুরের ২০টি লঞ্চ বন্ধ আছে। নৌযান শ্রমিকরা একটা দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এই দাবি সবার কাছে স্পষ্ট না।’
তিনি বলেন, ‘নৌযান শ্রমিকদের মধ্যে অনেক বিভক্তি রয়েছে। শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মালিক সমিতির কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের দাবি উপস্থাপন করা হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেভাবে আমরা এগিয়ে যাবো।’