বগুড়ায় দাম না পেয়ে গবাদি পশুর চামড়া নদীতে ও ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানালেন মাংস ব্যবসায়ীরা।
বুধবার ( ২৪ জুলাই ) দুপুরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বাজার সংলগ্ন ডাস্টবিন ও করতোয়া নদীতে চামড়া ফেলে দেন।
জানা গেছে, গবাদি পশুর চামড়ার দাম এতটাই কমে গেছে যে, অনেক সময় ক্রেতার অভাবে চামড়া বিক্রি করতে পারেন না মাংস ব্যবসায়ীরা। মাংস বিক্রি শেষ হলেও চামড়া বিক্রির জন্য তাদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরতে হয়। তারপরও চামড়া বিক্রি করে তাদের রিকশার ভাড়াও ওঠে না। এ কারণে ফতেহ আলী বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাংস বিক্রি শেষে তারা চামড়াগুলো কেটে কয়েক টুকরো করে নদীতে ফেলে দিবেন। সেই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে বুধবার কয়েকজন মাংস ব্যবসায়ী বেশ কিছু ছাগলের চামড়া করতোয়া নদীতে ফেলে দেন।
ফতেহ আলী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী সেলিম, মালেক, টিপু এবং লালু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গত ৩-৪ বছর হচ্ছে চামড়ার বাজারে ধস নামায় দাম কমতে শুরু করে। এরমধ্যে গত ৬ মাসে চামড়ার দাম এতটাই কমেছে যে, চামড়া নদীতে ফেলে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা বলেন, বর্তমানে বগুড়ায় গরুর চামড়া ১০০ থেকে ২৫০ টাকা, ছাগলের চামড়া ১০ -২০ টাকা এবং ভেড়ার চামড়া ১০-১৫ টাকায় বিক্রি করছে।
মাংস ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, ফতেহআলী বাজারের প্রতিদিন গড়ে ৫টি গরু,এবং খাসি ও ভেড়া জবাই হয় ৮০ থেকে ৯০ টি। এই গবাদি পশুর চামড়া বাজার থেকেই নিয়ে যেত চামড়া ব্যবসায়ীরা। এখন চামড়া বিক্রির আড়তে ঘুরেও দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
শহরের চকসূত্রাপুর চামড়ার আড়তে গিয়ে দেখা যায় দুপচাঁচিয়া থেকে চামড়া বিক্রি করতে এসেছেন সাইফুল ইসলাম ও রঙলাল। তারা ভ্যান যোগে ১২ টি গরুর চামড়া নিয়ে তারা বিক্রির জন্য ঘুরছেন। সাইফুল ইসলাম ও রঙলাল বার্তাটোয়েন্টিফোর. কমকে বলেন, আড়তে যে দাম বলে তাতে লাভ তো দূরের কথা চামড়া প্রতি ৫০-৬০ টাকা করে লোকসান হবে।
চামড়া ব্যবসায়ী তবারক সরকার ও শাহনেওয়াজ বাদশা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, চামড়ার ব্যবসায় ধস নেমেছে। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা বগুড়ার ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি বকেয়া টাকা দিচ্ছেন না। একারণে বাকী চামড়া সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ট্যানারি মালিকদের বেধে দেয়া দামের বাইরে বগুড়ার ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে পারেন না।