তিস্তা ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপরে

লালমনিরহাট, দেশের খবর

নিয়াজ আহমেদ সিপন,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, লালমনিরহাট | 2023-08-30 19:09:45

প্রথম দফায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে লালমনিরহাটের সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলার নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ৫ উপজেলার নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বর্তমানে চরাঞ্চল ও তীরবর্তী গ্রামের ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বুধবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ০৫ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ মিটার) বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুর ১২টায় ছিল ১৫ সেন্টিমিটারের ওপরে। তিস্তার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একেই সঙ্গে ধরলা পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়।

বন্যার পানিতে যেকোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে ঘরটি, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব অঞ্চলে জুলাইয়ের শুরুতে হওয়া সপ্তাহব্যাপী বন্যায় পানিবন্দি থেকে সবেমাত্র মুক্তি পেয়েছেন গ্রামবাসী। যে কারণে দ্বিতীয়বারের বন্যার আশঙ্কায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ।

তিস্তার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফের পানিবন্দি হতে শুরু করেছে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলো। এসব অঞ্চলে বিগত বন্যায় শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চল পাসাইটারী গ্রামের মানিক মিয়া ও মজমুল হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সোমবার (২২ জুলাই) পানিবন্দি হয়ে পরদিন মুক্তি পান তারা। বুধবার (২৪ জুলাই) ফের বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। এখন ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে ফের দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। ব্যারেজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ভারতের গজলডোবা ব্যারেজে বিপদসীমা অতিক্রম করায় উজানের ঢল বেড়ে যায়। পানি নিয়ন্ত্রণ করতে ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর