বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের নদ-নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সাগর-নদী থেকে ট্রলার বোঝাই করে ইলিশ নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারের ঘাটে ফিরছে। বাজারে ইলিশের পরিমাণ বেশি হওয়ায় দামও কম।
তবে বড় ইলিশের দাম একটু বেশি হলেও তা রয়েছে ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই।
এদিকে উপকূলের বাজারগুলোতে অধিক ইলিশ ওঠায় মাইকিং করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে থাকায় ইলিশের দোকানগুলোতে ভিড় রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত সাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে অন্তত ১৫টি বড় ফিশিং ট্রলার বাগেরহাটে এসেছে। বাগেরহাটের দড়াটানা নদীতে রয়েছে ইলিশের এ ট্রলারগুলোর সারিবদ্ধ লাইন। মাছ নামানো হচ্ছে এবং নেয়া হচ্ছে আড়তগুলোতে। কেউ ইলিশ মাছ বোঝাই ঝুড়ি টানছেন, কেউ আবার বরফ দিয়ে প্যাকেট করছেন। কেউ কেউ সেই প্যাকেট রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর জন্য ট্রাকে তুলছেন। সবমিলিয়ে জেলে-মাঝি, আড়তদার, মৌসুমী ব্যবসায়ী ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকেরা ইলিশ নিয়ে তাদের কাজকর্মে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বাগেরহাটের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিক পরিমাণ ইলিশ আসায় দাম বেশ কম। যে ইলিশ এর আগে ১ হাজার ৮শ থেকে ২৪শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, তা এখন বিক্রি হচ্ছে প্রায় অর্ধেকেরও কম দামে। আধা কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫শ টাকা, পৌনে এক কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ৭শ টাকা, আর প্রায় এক কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায়।
বাগেরহাটের দড়াটানা নদীর ঘাটে কথা হয় জেলে মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদেরকে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে এখন অনেক মাছ পাওয়া যাচ্ছে, আল্লাহ আমাদের উপর মুখ তুলে তাকিয়েছেন।’
বাগেরহাট বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. আমজাদ আলী বলেন, ‘বাজারে অনেক ইলিশ এসেছে। তাই দাম অনেক কম। এভাবে মাছ আসতে থাকলে আগামী সপ্তাহে দাম আরও কমে যাবে।’
বাগেরহাট উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, ‘গত সোমবার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর সুন্দরবনের নদ-নদী ও গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। যা আমরা আশাও করিনি। এ পর্যন্ত ১৫টি ফিশিং ট্রলার মাছ নিয়ে বাজারে এসেছে। আশা করছি নিয়মিত বৃষ্টি হলে আগামী সপ্তাহে ইলিশের সরবরাহ আরও বাড়বে।’
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. খালেদ কনক জানান, ৬৫ দিন মাছ ধরার যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তার সুফল এখন জেলেরা পাচ্ছে। বেশি বেশি মাছ ধরা পড়ছে।