মাথা নিয়ে গুজব, ছেলে ধরা আতঙ্ক ও গণপিটুনি প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে তৎপরতা শুরু করেছে নোয়াখালী জেলা পুলিশ। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজারসহ পাড়া-মহল্লায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে সভা, সমাবেশ ও মাইকিং।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভাও করা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের টহল জোরদারকরণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পাহারা বসানো হয়েছে।
সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তিকে দেখলে থানায় জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গুজবের ভিত্তিতে কোনো মানুষকে হত্যার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তারা।
বিভিন্ন স্থানে মাইকিংয়ে বলা হচ্ছে- একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে হতাহত করেছে। এধরনের ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া, দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এবং গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে মাথা নিয়ে গুজব, ছেলে ধরা আতঙ্ক ও গণপিটুনি প্রতিরোধে নোয়াখালীর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এছাড়া, দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের কবি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি। এলাকায় সন্দেহজনক কিংবা অপরিচিত কাউকে দেখলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশকে জানানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।
এতে আরও বক্তব্য দেন কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটন, কবি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান ইমাম রাসেল, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন রনি প্রমুখ।
এর আগে গত বুধবার (২৪ জুলাই) চাটখিল উপজেলার ডাক বাংলো কমিউনিটি সেন্টারে সচেতনতামূলক সভা করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো .আলমগীর হোসেন।
বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, জেলার নয় উপজেলার পুলিশ মাথা নিয়ে গুজব, দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করতে একটি কুচক্রী মহল গুজব রটাচ্ছে। যারা গুজব রটিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছেলে ধরা আতঙ্ক ও গণপিটুনি প্রতিরোধে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যেকোনো মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।