ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচরের নতুন চর গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ও পানি বৃদ্ধিতে দুর্ভোগে পড়ছেন গ্রামবাসী। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন তিন শতাধিক পরিবার। গত কয়েকদিনে ১৪টি পরিবারের বসতবাড়ি নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি।
অপরদিকে নদে বিলীন হওয়ায় ভিটেমাটি ছেড়ে দুর্গত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন। অনেকে পানির মধ্যে কষ্টে জীবনযাপন করলেও ভিটে ছাড়তে চাইছেন না। এলাকাবাসী জানান, ব্রহ্মপুত্র নদ ভাঙতে ভাঙতে ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুর উপজেলা সীমানালগ্ন এলাকায় এসে গতিপথ পরিবর্তন করে মরিচাররের নতুন চর এলাকায় ঢুকে পড়েছে। অচিরেই ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদ খনন করে গতিপথ মূলধারায় মিলিয়ে না দিলে নতুন এলাকায় ভাঙন ঠেকানো যাবে না। আর ভাঙন ঠেকানো না গেলে গ্রামটি বিলীন হয়ে যাবে।
জানা গেছে, উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর নতুনচর গ্রামটি ব্রহ্মপুত্র নদঘেঁষা। প্রতিবছর নদের ভাঙন ও বন্যার পানির সাথে লড়াই করে এখানে প্রায় সাড়ে তিনশ পরিবারের তিন হাজারের মতো মানুষ বসবাস করছেন।
রোববার মরিচারচরের নতুন চর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ ভাঙতে ভাঙতে গ্রামবাসীর ঘরের দুয়ারের সামনে চলে এসেছে। ইতোমধ্যে নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে গ্রামের শহীদুল্লাহ, আজিজুল হক, শাহীন মিয়া, আমান উল্লাহসহ অন্তত ১৪ জনের বসতভিটা। ভাঙনের আশঙ্কায় ঘরবাড়ি ও গাছপালা ও গবাদি পশু অনত্র সরিয়ে নিচ্ছেন এলাকাবাসী। নদে বড় নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় পানি ভেঙে ছুটছেন তারা।
অপরদিকে নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন নদঘেঁষা গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। অনেকেই ভিটেমাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। ভাঙনের হুমকিতে থাকা মরিচারচর-উচাখিলা সড়কটিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে রক্ষার কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বর্না কবলিত পরিবার সদস্যরা জানান, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে রুমানা তুয়া ভাঙন কবলিত এলাকা পরদির্শন করে পৃথকভাবে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। কিন্তু সেটা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
মরিচারচর নতুনচর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, ‘গত ১১ দিন ধরে পানিবন্দী হয়ে আছি। অনেকের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিলিন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে অনেক পরিবার।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘ইতোমধ্যে নদে ড্রেজিং করার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। নদটি ড্রেজিং করে মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। এছাড়া যাদের ঘরবাড়ি নদে বিলিন হচ্ছে তাদের বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’