কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে জয়নাল হাজারী (৩৫) নামে এক যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৯ জুলাই) তার মৃত্যু হয়।
নিহত জয়নাল উপজেলার সরসপুর ইউনিয়ন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতিও ছিলেন। তার বাড়ি ভাউপুর পূর্বপাড়া গ্রামে, বাবার নাম মৃত আনসার আলী।
সরসপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কাসেম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, জয়নাল হাজারী একজন পরিশ্রমী রাজনৈতিক কর্মী। তাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই পর্যন্ত অন্তত ১০টি মিথ্যা মামলার আসামি করা হয়েছে তাকে। সর্বশেষ গত নির্বাচনের আগের দিন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে পুলিশের মাধ্যমে জেলে পাঠায়।
তিনি বলেন, গত রোববার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকানে যান জয়নাল হাজারী। এ সময় পূর্ব থেকে প্রস্তুত থাকা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১০/১৫ জন নেতাকর্মী তার ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাকে পেটাতে শুরু করলে জীবন বাঁচাতে তিনি পাশের বাড়ির নুরুল আমিনের ঘরে আশ্রয় নেন। নুরুল আমিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
সেখানে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তারা পিটিয়ে জয়নালের একটি পা ভেঙে ফেলে এবং মাথাসহ পুরো শরীরে অন্তত ৫০টি কোপ দেয়। পরে স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাইমুড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢামেক হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা।
তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, আমার বাড়িতে ওই যুবদল নেতাকে হত্যা করার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাকে কে বা কারা হত্যা করেছে, আমি বলতে পারব না। তবে লোকমুখে শুনেছি, তার বাড়ির সামনের চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আসা মুখোশধারী কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় জড়িত নয়।
এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেজবাহ উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, নিহত যুবদল নেতার বিরুদ্ধে থানায় সাতটি মামলা রয়েছে। তবে কারা তাকে হত্যা করেছে, সেটা এখনো জানা যায়নি।
তবে এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের কেউ এখনো থানায় মামলা দায়ের করেননি। মামলা হলে তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।