আমদানি পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে এ পথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রেখেছেন ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট মেইনটেন্যান্স কমিটি। তবে এ পথে আমদানি- রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য খালাস কার্যক্রম ও এ পথে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল ৯ টা থেকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে গত (২৭ জুলাই) পেট্রাপোল বন্দরে সমাবেশ করে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদেরকেও সঙ্গে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আশা করছি একটি সন্তোষজনক সমাধানের মধ্য দিয়ে দ্রুত চলমান সমস্যার সমাধান হবে।
ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস করতে গেলে ভারতীয় ট্রাক চালকদের কাছ থেকে পথে পথে নামে-বেনামে চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া বন্দরের শ্রমিকরা অতিরিক্ত হারে জোরপূর্বক টাকা নিচ্ছেন। ছাড় দিচ্ছে না সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মচারীরা। এ বিষয়ে বার বার অভিযোগ জানিয়ে আসলেও বেনাপোল বন্দরের ব্যবসায়ীরা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে তারা আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেন। নায্য দাবি না মানা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলতে থাকবে বলেও জানান তিনি।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, কদিন বাদেই মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব। এ সময়ে লম্বা ছুটি থাকছে। এখন পণ্যের চাহিদা বেশি। বাণিজ্য বন্ধ থাকলে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকশানের কবলে পড়বেন। সন্তোষজনক একটি সমাধানের মধ্য দিয়ে আমরা আশা করছি দ্রুত এই সংকটের সমাধান হবে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের বিষয়টি মূলত পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে এ পারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওপারের ব্যবসায়ীদের হিসাব, নিকাশ। এ নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বাণিজ্য সচলের চেষ্টা করছেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এ পথে আমদানি, রফতানি বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত সচল রয়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার ইনেসপেক্টর শামিম হোসেন বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ব্যবসায়ীরা এ পথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রেখেছেন। সকাল থেকে কোন ধরনের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য হয়নি।
এদিকে আমদানি, রফতানি বন্ধে দুই পার বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় সহস্রাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও পচনশীল খাদ্য দ্রব্য রয়েছে। যদি দীর্ঘ সময় নিয়ে ধর্মঘট পালিত হয় তবে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন।