নারায়ণগঞ্জে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা। শুধুমাত্র জুলাই মাসে জেলায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শহরের দুইটি সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে রোগীদের সংখ্যা।
রোববার (২৮ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলীর ছমিরনগর এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে শান্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
শান্তের বাবা জসিমউদ্দিন জানান, তার এক মাত্র ছেলে শান্তর কয়েকদিন আগে হঠাৎ জ্বর হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর পর ডেঙ্গু রোগ হয়েছে জানানো হয়। অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিউতে রাখা হয়। রোববার বিকেলে শান্ত মারা যায়। সম্প্রতি শান্ত দক্ষিণ কোরিয়ার ভিপি লটারি পেয়েছিলেন।আসছে ঈদের পরেই সেখানে যাওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: দিনভর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৩৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী
শহরের ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা কায়কোবাদ সিদ্দিকী জানান, ৬ জুলাই তার ছেলে শাওন কবীর সালেহীন (৩৮) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে ১১ জুলাই রাতে তিনি মারা যান।
শাওন কবীর সালেহীন ঢাকার সিলভা মেথড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে হেড কন্ট্রোলার হিসেবে চাকরি করতেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ এক্স ক্যাডেটস অ্যাসোসিয়েশন নারায়ণগঞ্জ ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল।
ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকার বেলাল হোসেন মিন্টু (৪৫) নামের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ জুলাই বেলা ১১টায় রাজধানীর মহাখালী এলাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন ওই প্রধান শিক্ষকের স্বজনরা। নিহতের ভাগিনা বাদশা মিয়া জানান, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ দিন আগে রাজধানীর মহাখালী এলাকায় একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তিনি মারা যান।
তবে মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে অবগত না বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তে মৃত্যুর খবর পাইনি। তাছাড়া ডেঙ্গু নয় যেকোনো মশার কামড় থেকে বাঁচতে হাসপাতালের জানালায় নেট দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ডেঙ্গু আতঙ্কে সকল রোগীদের মশারি দেয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন মুহাম্মদ ইমতিয়াজ বার্তাটোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ শহরের দুটি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী এসেছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কোনো রোগী নেই। যারাও আক্রান্ত হয়েছে তারা নারায়ণগঞ্জে বসবাস করে ঠিকই কিন্তু তারা সবাই ঢাকায় চাকরি করে কিংবা বেড়াতে গিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকার মত নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গুর প্রবণতা তেমন নেই বলেও দাবি করেন।’