পঞ্চগড় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি প্রায় ১০ বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অভিযোগ আছে, মেশিনটি মেরামত করার কোনো উদ্যোগ নেয় না কর্তৃপক্ষ। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার হাজার হাজার রোগী।
জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার নিম্ন ও মধ্যবিত্তের মানুষের একমাত্র ভরসা এ হাসপাতালটি। তবে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় তাদের। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সিমেন্স এক্স-রে ৫০০এমএ মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। সিএমএসডি থেকে বরাদ্দ আসা এক্স-রে মেশিনটি পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের ২০০৯ সালে স্থাপন করা হয়। প্রতিদিন ২০০-৩০০টি এক্স-রে করার ক্ষমতা থাকলেও এখন সেটা আর ব্যবহার করা যায় না।
আরও জানা গেছে, ২০০২ সালের দিকে ২০০ এমএ মেশিন দিয়ে এক্সে-রে করা হত। পরে ২০০৯ সালে ৫০০এমএ মিশনটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু সেটিও কিছুদিনের মধ্যে বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে ১০০এমএ মেশিন দিয়ে এক্স-রে করা হচ্ছে। যেটি দিয়ে প্রতিদিন ১০টি এক্স-রে করা যায় না। কিন্তু প্রতিদিন চাহিদা আছে ৫০টি।
এদিকে এক্স-রের মান নিম্ন, ভোগান্তি ও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে পঞ্চগড়ের সাধারণ রোগীদের বাধ্য হয়ে প্রাইভেট প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে সেবা নিতে হচ্ছে।
জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা দেবনগর এলাকার বাসিন্দা সেলিনা বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'হাসপাতালে শুধু ফ্রি থাকা যায়। এখানে ডাক্তার নেই, এক্স-রে মেশিন থাকলেও বিকল।'
একই ভোগান্তির কথা জানান পঞ্চগড় পৌরসভার বাসিন্দা আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, 'এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে আমাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে।'
জানা গেছে, সরকারের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএএসডি) ৪৫টি ডিজিটাল এক্সে-রে মেশিন মজুদ থাকলেও প্রাইভেট প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের যোগসাজশে সেগুলো হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে না।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের এক্স-রে অপরেটর আরফান আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'বর্তমানে ব্যবহৃত এক্স-রে মেশিনটি দিয়ে ভালো ও পরিষ্কার ছবি না আসায় রোগীরা বিভিন্ন অভিযোগ করেন।'
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) প্রতীক কুমার বনিক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার এক্স-রে মেশিনের চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।'