৬ লাইট-ফ্যান ও ১ ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা

মানিকগঞ্জ, দেশের খবর

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-27 22:33:17

দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে বিদ্যুতের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেই বিদ্যুতের জন্য এখন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রায় অর্ধশত গ্রাহককে। গত জুলাই মাসে এক গ্রাহকের তিনটি লাইট ও তিনটি ফ্যান (মোট ৬টি) এবং একটি ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৬ টাকা।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ নয়াপাড়া এলাকার বেশ কিছু আবাসিক বাড়িতে বিদ্যুতের এমন বিল হাতে পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে গ্রাহকরা। কাজকর্ম রেখে পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট অভিযোগ কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে তাদের।

পল্লী বিদ্যুতের মিটার লেখকেরা সরেজমিনে না এসে বিল তৈরি করায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে দাবি ভুক্তভোগিদের। চলতি বছরের মে-জুন বা অন্যান্য মাসগুলোতে বিদ্যুতের বিল সামান্য কিছু হেরফের হলেও জুলাই মাসে গরমিলের পরিমাণ অনেক বেশি। এতে বিপাকে পড়েছে এসব গ্রাহকরা।

শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এসব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। অসামঞ্জস্য এসব বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

হরগজ নয়াপাড়া এলাকার মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. আল আমিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, এলটি-এ (আবাসিক) ট্রারিফ মিটারের গ্রাহক তিনি। চলতি বছরের মে মাসে তার বিল এসেছে ৪৯৫ টাকা। আর জুন মাসে এসেছে ৫৫২ টাকা। কিন্তু জুলাই মাসে তার বিল এসেছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৬ টাকা। এখন বাড়ি ঘর বিক্রি করে এই বিল দেওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে জানান তিনি।

আর জুলাই মাসের বিলের কাগজটি দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পুনরায় বিল করে দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সাড়া পাননি। তাই বিলের বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত রয়েছেন তিনি।

একই এলাকার মো. নজর আলীর ছেলে মো. আলী জানান, আগস্ট মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত তার মিটারের রিডিং হয়েছে ২৫৩৬ ইউনিট। অথচ জুলাই মাসের ১৮ তারিখে বিলের রিডিং তৈরি করেছে ২৫৭০ ইউনিট। জুন মাসে ৩৩১ টাকা বিদ্যুৎ বিল দিলেও জুলাই মাসে সেখানে গুনতে হবে ১৩০৬ টাকা।

হরগজ নয়াপাড়া ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী মেম্বার বায়েলা বেগমসহ ভুক্তভোগীরা জানান, পল্লী বিদ্যুতের মিটার রিডিং নেওয়ার জন্য ৫-৬ মাস পরপর লোকজন আসেন। আর বাড়িতে বসে বসে ভুতরে বিল তৈরি করেন। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তারা।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কান্দাপাড়া অভিযোগ কেন্দ্রে গেলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কেন্দ্রটির ইনচার্জ মো. শামীম আল মামুন ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে জানান, বিল প্রস্তুত বা তৈরির সঙ্গে তারা কেউ জড়িত নয়। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাটুরিয়া সাব-জোনাল অফিস এ বিষয়ে বলতে পারবে।

পরে সাটুরিয়া সাব-জোনাল অফিসের এজিএম আব্দুল খালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জুলাই মাসে অসামঞ্জস্য বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি জানতে পেরেছেন তিনি। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।

তবে সরেজমিনে গ্রাহকদের বাড়ি না গিয়ে বিল তৈরির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর