সিরাজগঞ্জে দেশি পশুর কদর বেশি

সিরাজগঞ্জ, দেশের খবর

সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, সিরাজগঞ্জ | 2023-08-24 21:15:16

আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে সিরাজগঞ্জের পশুর হাটগুলো। এবারের হাটগুলোতে দেশি গরুর কদর বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, গতবারের চেয়ে দামের পার্থক্য খুব বেশি না হওয়ায় কৃষক ও খামারিরা পশুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। তবে ক্রেতাদের দাবি, দাম বেশি হওয়ায় বাজেটে ঘাটতি পড়ছে। অন্যদিকে খামারিরা জানিয়েছেন, পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় পশু পালনে খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে যদি ভারতীয় গরু আসে তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জেলার ৯ উপজেলায় এ বছর কোরবানির জন্য এক লাখ ৪৪ হাজার ২৪৩টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৮ হাজার ৪০৬টি গরু, ৪৭ হাজার ৬১৭টি ছাগল এবং বাকিগুলো ভেড়া ও মহিষ। এসব পশুকে দেশি দানাদার ও প্রাকৃতিক খাবার দেয়া হচ্ছে। যদিও বন্যায় পশু পালনে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।

জানা গেছে, শহরের শাহজাদপুর, উল্লাপড়া, সদর, বেলকুচি, চৌহালী, তাড়াশ, রায়গঞ্জসহ ৯ উপজেলায় এ বছর পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সোয়া লাখ। কিন্তু প্রতি বছরের মতো এ বছরও জেলায় অতিমাত্রায় দেশি পশু মোটাতাজাকরণ চলছে। এবারও এসব দেশি পশু জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে। খামারিরা গাভী পালনের পাশাপাশি ষাঁড়ও পালন করছেন। তবে গো খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে পশু মোটাতাজা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের। অবশ্য তাদের আশা, মোটাতাজাকরণে খরচ যত বেশিই হোক, কোরবানির হাটগুলোয় যদি শেষ পর্যন্ত বিদেশি পশু স্থান না পায় তাহলে তারা লাভের মুখ দেখবেন।

সোমবার বিকালে সলঙ্গা হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটে ছোট-বড় প্রচুর কোরবানির পশু উঠেছে। হাটে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার গরু বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছু গরুর দাম তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। আর হাটে ছাগলের চাহিদাও রয়েছে।

এদিকে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাটে পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ কর্মরত আছে। জালনোট শনাক্তের জন্য মেশিন বসানো হয়েছে। সলঙ্গা থানার শহরিয়ার পুর গ্রামের রিপন আহম্মেদ নামে এক ক্রেতা জানান, হাটে অনেক দেশি গরু উঠেছে। তবে ভারতীয় গরু না আসায় গরুর দাম এবছর একটু বেশি।

সলঙ্গা থানার আমশড়া গ্রামের আলী আশরাফ নামে আরেক ক্রেতা জানান, হাটে দালালদের দৌরাত্ব না থাকায় প্রতি বছর এই হাট থেকে তারা গরু কেনেন। তবে গরুর দাম এ বছর একটু বেশি।

তাড়াশ উপজেলার মাধবপুর গ্রামের ফজলার রহমান খান, সলঙ্গা থানার চড়িয়া উজির গ্রামের বাবলু সরকার, থানার মালতি নগর গ্রামের আব্দুর করিমসহ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, এ বছর দেশি গরুর চাহিদা বেশি। ফলে গরু প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা দাম বেড়েছে। ফলে লাভও বেশি হচ্ছে। তবে এখনও হাটে গরু কেনার মানুষ কম। সবাই আসছেন দাম যাচাই করছেন, কিনছেন কম।

পাবনার মির্জাপুর উপজেলার চয়ড়া গ্রামের রানা মাসুদ, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার মাকিদয়িার গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, ক্ষুদ্র শিমলা আব্দুস সালাম আকন্দসহ কয়েকজন ছাগল বিক্রেতা জানান, প্রতি বছর বিভিন্ন জেলা থেকে এই হাটে ছাগল কিনতে আসেন অনেকে। এবছর ছাগল কম বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদের আগেরদিন ছাগল বিক্রি বাড়তে পারে। হাটে ছাগল বিক্রি হচ্ছে ৬-২১ হাজার টাকা দরে।

সলঙ্গা হাট ইজাদার জাহাঙ্গীর আলম লাবু জানান, হাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের মধ্যে দেশি পশু কেনার চাহিদা রয়েছে। এবারের ঈদে বিভিন্ন এলাকার খামারিরা গরু পালন করেছেন।

সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেড জেড মো. তাজুল হুদা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হাটে পোশাকধারী পুলিশসহ সাদা পোশাকের পুলিশও নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া জালনোট শনাক্তের জন্য মেশিন বসানো হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর