ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় ইলিশের ভরা মৌসুমেও মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার জেলেরা। এনজিও আর মহাজনের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মাটি হয়ে গেছে তাদের ঈদ আনন্দ। অনেকে আবার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার জলসীমানায় ইলিশ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন ভোলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ জেলে। ইলিশের মৌসুমে অনেক জেলে বিভিন্ন এনজিও এবং মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নতুন জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যান। কিন্তু ভরা মৌসুমে জালে উঠছে ৩-৪টি জাটকা।
মহাজনের ঋণ পরিশোধ দূরের কথা, ট্রলারের তেলের খরচও উঠছে না। দোকান থেকে বাকিতে চাল, ডাল, তেল কিনে টাকা পরিশোধ করতে পারছে না অনেকে। ফলে এখন দোকানদাররা আর বাকিতে মালামালও দিচ্ছেন না।
এদিকে, অনেক জেলে ঋণ ও সংসার চালানোর চাপে নৌকা ও জাল বিক্রি করে বাড়ি ঘর ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করছেন।
আড়তদার মোহাম্মদ নোয়াব জানান, জেলেরা তাদের কাছ থেকে যেভাবে দাদন নিয়েছে, তারাও ব্যাংকের কাছ থেকে লোন নিয়েছে। জেলেরা মাছ দিতে না পারায় তারাও ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। ফলে আড়তদাররা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখন ব্যাবসা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অ্যাডডভোকেট নজরুল হক অনু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে সাগরে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করায় জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর ভরা মৌসুমেও সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই ঈদের আগে জেলেদের বিশেষ প্রণোদনার আওতায় আনা উচিত।’
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় প্রচুর বৃষ্টি হয়, আর এ সময় ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আগস্টের মাঝামাঝিতে বৃষ্টিপাত বাড়লে নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।’