নারায়ণগঞ্জে সড়ক পথে চাঁদা দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলোকে। নারায়ণগঞ্জে প্রবেশমুখে দুইটি স্থানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকগুলোকে চাঁদা দিতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক দিয়ে আসার পথে পোস্তগোলা ও শ্যামপুরে পশুবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি চলছে। পোস্তগোলায় শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নাম ও শ্যামপুরে শ্রমিক লীগ ও পুলিশের নাম ভাঙিয়ে নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। এর ফলে বাজারে এর প্রভাব পড়বে পশু ক্রেতাদের উপর।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ফতুল্লা ডিআইটি মাঠ পশুর হাটে ব্যাপারীদের সাথে কথা বলে জানা যায় এসব তথ্য। সকাল থেকে গভীর রাত অব্দি পালা করে চাঁদাবাজরা রাস্তায় গাড়ি আটকে রাখে। গভীর রাতে শ্যামপুরে চাঁদাবাজরা না থাকলেও পোস্তগোলার দিকে সারারাতই চাঁদাবাজরা সক্রিয় থাকে। গাড়ি প্রতি ৫০০ টাকা করে ব্যবসায়ীদের কাছে দাবি করে চাঁদাবাজরা। চাঁদা দিতে না চাইলে পথ আটকে রাখা, গাড়ির চাবি নিয়ে যাওয়া কিংবা গালিগালাজ করে মারধরের ভয় দেখায় এসব চাঁদাবাজরা।
তবে ভিন্ন চিত্র ট্রলারে পশু পরিবহণে। ট্রলারে আনা নেওয়ায় পড়তে হয়নি চাঁদাবাজদের পাল্লায়- এমনটি জানালেন ব্যাপারী নজরুল। সিরাজগঞ্জ থেকে সোজা ফতুল্লায় ভিড়েছেন ট্রলার নিয়ে। সড়কে যানজট ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য থাকায় নদীপথ বেছে নিয়েছেন তিনি। সবে ২৩টি গরু আনলেও ঈদের আগে আরও দুই ট্রলারে মোট ৭৫টি গরু হাটে নিয়ে আসার কথা জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, ‘সড়ক পথে ঢুকতেই ঘাটে ঘাটে চাঁদার কারণে গরু প্রতি পরিবহণ খরচ বাড়ছে। গরুর খাবার ও আনুসাঙ্গিক মিলিয়ে গরুপ্রতি প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ বাড়ে। একদিকে গরুর দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের চাহিদা নিয়ে শঙ্কা, অন্যদিকে খরচের পাল্লা ভারী। শেষ মুহূর্তে পাল্লা লোকসানের দিকে এগোয় কিনা সেই ভয় কাজ করছে।’
এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ এক প্রেস ব্রিফিং এ বলেন, ‘ঈদুল আজহা ঘিরে বৈধ জায়গাতে যেন কোরবানির হাট বসে সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। গত ৪ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জে জোর করে একটি গরুবাহী ট্রাক থেকে গরু নামানোর চেষ্টা করেছিল। সাথে সাথে তাদেরকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দিয়েছি। গরুর পাইকাররা নিজেদের পছন্দের হাটে গরু বিক্রি করবে। কেউ বাধা বা চাঁদা দাবি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।