শেরপুরের শ্রীবরদীতে শিক্ষকের বেতাঘাতে ছয় শিক্ষার্থী আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) বিকালে শ্রীবরদী এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক নূর ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, সম্প্রতি ঐ স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সাথে ঐ শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং সঠিকভাবে পাঠদান না করে গল্প করেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিক বিচার দেওয়ায় নুর ইসলাম মঙ্গলবার ক্লাস চলাকালীন ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বেত্রাঘাত করেন।
এতে তিন জন গুরুতর আহত হয়ে শ্রেণিকক্ষে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রীবরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে। হাসপাতালে ভর্তিকৃতরা হলো- ঐ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী রওনকজাহান বুশরা, শাউলিয়া জাহান শূর্মি ও সোহানা ইসলাম স্মৃতি।
এদিকে শিক্ষক নুর ইসলাম কৌশলে স্কুল থেকে পালিয়ে গেলেও অভিভাবকদের তোপের মুখে সন্ধ্যা ৬টার দিকে নুর ইসলামকে আটক করে পুলিশ।
ঐ স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিমা আক্তার জানান, নুর ইসলাম শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় তাদের সাথে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং সঠিকভাবে পাঠদান না করে গল্প করেন। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দেওয়ায় নুর ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে মারপিট করেন।
আহত এক শিক্ষার্থীর পিতা রুকুনজ্জামান শিপন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নূর ইসলাম স্যারের নামে প্রধান শিক্ষকের নিকট বিচার দিলে শিক্ষক নুর ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়ে সহ একাধিক শিক্ষার্থীকে বেতাঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলেন।’
এ বিষয়ে শ্রীবরদী এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, ‘একদিন পূর্বে শিক্ষার্থীরা তার কাছে মৌখিকভাবে বিচার দিয়েছিল। তিনি তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক নূর ইসলাম বলেন, ‘ক্লাসে একই পড়া বার বার দেওয়ার পড়ও না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরকে স্কেল দিয়ে দুটি করে বেত্রাঘাত করেছি।’ শিক্ষার্থীদের অশালীন ভাষায় কথা বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
এ ঘটনায় উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন স্কুলটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষক নূর ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।’