ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বখাটের অত্যাচার ও বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে জেলার সরাইল ও আশুগঞ্জের দুই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) চিঠি দিয়েছে স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তার।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সরাইল নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ওই স্কুলছাত্রী নিজেই এ চিঠি পৌঁছে দেয়।
এর আগে সোমবার (৫ আগস্ট) একই চিঠি আশুগঞ্জ নির্বাহী অফিসারের কাছে পৌঁছায় স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তার। সে আশুগঞ্জ উপজেলার বইগর গ্রামের মৃত নুরুল আমীনের মেয়ে এবং বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী।
চিঠিতে স্কুলছাত্রী উল্লেখ করে, সরাইল উপজেলার বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সে। তার রোল নম্বর ‘দুই’। চারবছর আগে তার পিতা গ্রামের দুষ্কৃতকারীদের হাতে খুন হন। সেই থেকে তার পরিবার চরম অসহায়ত্বের মাঝে দিনযাপন করে আসছে। বইগর গ্রামের শেখ সাদি ভূইঁয়ার বখাটে ছেলে উছমান ভূইঁয়া প্রায়ই এই স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত করে।
এতে পরিবারের লোকদের কাছে বিচার চাওয়ায় ওই বখাটে স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কয়েকদিন আগে এই বখাটের পক্ষ নিয়ে দূর্গাপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম, সজিব ভূইঁয়া, আকবর ভূইঁয়া, মলাই ভূইঁয়া ও শাহআলম ভূইঁয়া স্কুলছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার মাকে চাপ সৃষ্টি করে বিয়ের দিনতারিখ ঠিক করেন।
এদিকে, এই বিয়ের খবর পেয়ে স্কুলছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে জেলার সরাইল উপজেলার কাটানিশার গ্রামে বড় ভগ্নিপতি জাবেদ মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। শনিবার (৩ আগস্ট) বখাটে উছমান ভূইঁয়া সেখানে গিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তার জানায়, ‘আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমি পড়ালেখা করতে চাই। আমার বড় তানজিনা আক্তার নামে এক বোন অবিবাহিত অবস্থায় আছেন। তিনি আনোয়ারা মহিলা কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্রী। আমি বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে সকলের সহযোগিতা চাই।’
মোমেনার বড় ভাই সালমান আমিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ওসমান ভূইয়ার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। সে প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার কয়েকজন ওসমানের পক্ষে আমাদের বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করছে। আমরা এই ঘটনার ন্যায় বিচার কামনা করি।’
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজিমুল হায়দার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তারের চিঠি পেয়েছি। ওই ছেলেসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি ডেকে পাঠিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’