আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে পঞ্চগড়ের কামার পল্লীতে। রাত-দিন হাতুড়ি ও লোহার টুং টাং শব্দে সরগরম থাকছে এলাকা। আর নাওয়া-খাওয়া ভুলে অবিরাম কাজ করে চলেছে কামাররা। তৈরি করছে হাঁসুয়া, ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি। পাশাপাশি চলছে পুরাতন সরঞ্জামে শান দেয়ার কাজ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার ৫ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও কামার পল্লীতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা। সারা বছর কাজের চাপ না থাকলেও ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কাজের চাপ বাড়ে।
কামারদের দাবি, এই কোরবানির মৌসুমেই তাদের সবচেয়ে বেশি কাজ হয়।
এদিকে, কোরবানির পশুর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে বা পুরতন সরঞ্জামে শান দিতে ভুলছে না মুসল্লিরা। এ জন্য ভিড় জমাচ্ছে কামার পল্লীতে। অনেকে পছন্দ করে কিনছে ছুরি, দা, কুড়াল, চাপাতি, হাঁসুয়া। সঙ্গে মাংস কাটার জন্য কাঠের গুঁড়ি কিনছে অনেকে।
কামার পল্লীর বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা গেছে, প্রতিটি চাপাতি বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে দুইশ থেকে এক হাজার টাকা, দা ২০০-৩০০ টাকা, হাঁসুয়া ২০০-২৫০ টাকা ও ছোট ছুরি ২৭০-৬০০ টাকা। এছাড়া বঁটি প্রতি পিস ২০০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের দাবি, এ বছর পশু কোরবানির উপকরণের দাম তুলনামূলক বেশি। আর কামারদের দাবি, কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় সরঞ্জামাদির দাম কিছুটা বাড়তি।
জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা চৌরাস্তা বাজারের কামার পল্লীর আমিনুল ইসলাম বাবু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'গত ১৫ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত আছি। আমার পূর্বপুরুষরাও এই কাজ করতেন। এখন সারা বছর তেমন কোনো কাজ থাকে না। তবে কোরবানির ঈদের আগে কাজের চাপ থাকে।’
পঞ্চগড় কামার পল্লীর বশির আলম জানান, চাপ থাকায় রাতদিন কাজ করতে হয়। নতুন সরঞ্জামের চাহিদার পাশাপাশি পুরাতনগুলোতে শান দেয়া হচ্ছে। নতুন সরঞ্জাম তৈরি ও শান দিতে আকার ভেদে টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে এ বছর বেশিরভাগ ক্রেতা পুরাতন সরঞ্জাম মেরামত করতে নিয়ে আসছে।
পশু জবাইয়ের উপকরণ কিনতে আসা আবু সালেক নামে এক ক্রেতা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। তাই আগে থেকেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কিনে রাখছি।’
এ বিষয়ে পঞ্চগড় বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আলিম খান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘কেউ যাতে অধিক দামে পণ্য বিক্রি করতে না পারে এবং কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি।’