শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বগুড়ায় কোরবানির গরুর হাট। প্রতিটি হাটে প্রচুর গরু আমদানি থাকায় এবার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। দাম সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় পছন্দের গরু কিনতে পেরে সন্তুষ্ট ক্রেতারা। তেমনি পছন্দ অনুযায়ী গরু বিক্রি করতে পেরে সন্তুষ্ট বিক্রেতারাও।
সরেজমিনে বগুড়ার বিভিন্ন হাট ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার প্রতিটি হাটেই মাঝারি সাইজের অর্থাৎ দুই থেকে তিন মণ ওজনের গরুর চাহিদা বেশি। এই সাইজের গরুর দাম ৬০ থেকে ৭০ হাজারের মধ্যে রয়েছে। বড় সাইজের অর্থাৎ চার মণ বা তার বেশী ওজনের গরুর চাহিদা কম থাকায় দামও তুলনামূলক কম রয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের হুমায়ুন কবীর মামুন বুধবার (৭ আগস্ট) মহাস্থান হাট থেকে গরু কিনেছেন ৮১ হাজার টাকায়। তিনি বলেন চার মণের থেকে বেশি মাংস হবে। দুই বছর আগেও এধরনের গরুর দাম এক লাখ টাকার বেশি ছিল।
চলতি সপ্তাহে মহাস্থান হাটে সবচেয়ে বড় সাইজের গরুর দাম উঠেছিল ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা। এই হাটে ৩০-৩৫ হাজার টাকার মধ্যেও গরু বিক্রি হয়েছে। বগুড়ার গরুর হাটের মধ্যে গাবতলী উপজেলার তরনী হাট অন্যতম।
হাটে গরু কিনতে যাওয়া বগুড়া শহরের ব্যবসায়ী আসাদুল হক কাজল বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, হাটে প্রচুর গরুর আমদানি রয়েছে। তরনীর হাটে কেনাবেচার উপর নির্ভর করে অন্যান্য হাটের গরুর দাম। তবে শহরের মানুষ গরু রাখার জায়গার অভাবে ২-৩ দিন আগে গরু কিনে থাকেন। তার মতে এবার গরুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
বগুড়া সদরের নামুজা গ্রামে শাহাদৎ হোসেন তার বাড়িতে পালন করা গরু বিক্রি করেছেন এক লাখ টাকায়। তিনি বলেন, ১৫ মাস গরুটি পালন করে তার বেশ ভাল লাভ হয়েছে। খুব বেশি দামে বিক্রি করার চেষ্টা করিনি। গরু বিক্রি করার আগে দুই হাটে দাম যাচাই করে এক লাখ টাকায় ছেড়ে দিয়েছি।
দেশে প্রাণিসম্পদের ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ার কারণে গরুর বাজার স্থিতিশীল রয়েছে বলে মন্তব্য করেন হাটে গরু কিনতে আসা অনেকে। জোবায়ের হাসান নামে এক বিক্রেতা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একটি করে হলেও গরু পালন করা হয়। একারণে সারাদেশে প্রচুর গরু রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার বগুড়া জেলায় কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার গবাদি পশু। সেখানে জেলায় কোরবানি দেয়ার মত গবাদি পশুর সংখ্যা ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৮টি। এরমধ্যে গরু ২ লাখ ৯ হাজার ৩৬২টি, মহিষ ২ হাজার ৪৮টি, ছাগল ১লাখ ৫০ হাজার ৩২৬টি এবং ভেড়া ২৬ হাজার ৪৭২টি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, জেলার নিজস্ব গবাদি পশুর মাধ্যমে কোরবানির চাহিদা পূরণ করেও ৫০ হাজার গবাদি পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা যাবে। গরু-ছাগল-ভেড়া পালন লাভজনক হওয়ায় গ্রামের মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশি গবাদি পশু পালন করেন। যার কারণে কোরবানির পশুর বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।