নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির জন্য ড্রোন উড়বে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার আকাশে। আগামীকাল সোমবার ১৯২তম ঈদুল আজহার জামাতকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দান।
মাঠের আশপাশের এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শোলাকিয়ার ঈদগাহ মাঠে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, আরআরএফসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত থাকবে। মাঠের বাইরে, ভেতরে ও প্রবেশ পথে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জামাতকে সামনে রেখে শহর ও আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।
ঈদগাহ ময়দান ও আশেপাশের এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। মাঠে স্থাপন করা হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার। ঈদগাহ ময়দানের প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিদের ঢুকতে হবে ঈদগাহ ময়দানে। এর আগে আরও কয়েক দফা মেটাল ডিটেক্টরে মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করা হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শুধু পাতলা জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন। তবে বৃষ্টি হলে ছাতা নিয়ে আসতে পারবেন।
এ বছর ঐতিহ্যবাহী এই ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবারের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা হিফজুর রহমান খান। শোলাকিয়া ঈদগাহের নিয়মিত ইমাম ইসলাহুল মুসলিহীন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ হজে যাওয়ায় বিকল্প ইমাম হিসেবে মাওলানা হিফজুর রহমান খান জামাতে ইমামতি করবেন।
রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে নিরাপত্তা ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ। ব্রিফিংয়ে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও পেশাদারি মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন।
এছাড়া ঈদের দিন সোমবার (১২ আগস্ট) বৃষ্টির সম্ভাবনার বিষয়টি মাথায় রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রেইনকোট সাথে নিয়ে আসারও নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।
মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ সাংবাদিকদের জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ঈদজামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৩২টি চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। চেকপোস্টগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে প্রত্যেককে অন্তত তিন বার তল্লাশি হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৮২৮ সালে জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির উপর এ মাঠের গোড়াপত্তন হয়। ঐ বছর স্থানীয় সাহেব বাড়ির জ্যেষ্ঠ পুরুষ সৈয়দ আহমদ (র.) এর ইমামতিতে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেই জামাতে মুসল্লির সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল এক লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ। এই সোয়া লাখ থেকেই উচ্চারন বিবর্তনে বর্তমানে ‘শোলাকিয়া’ নামকরণ হয়েছে।