আড়তদাররা চামড়া না কেনায় পানির দরে বেচা-কেনা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। আড়তদাররা বলছেন, গত বছরের পাওনা টাকা না পাওয়ায় চামড়া কিনতে পারেননি।
আর দর কম হওয়ার এ সুযোগে সীমান্তবর্তী জেলা থেকে চামড়া ভারতে পাচার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, চামড়া পাচার রোধে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছে।
জানা যায়, প্রতিবছর কোরবানি ঈদে চাপাইনবাবগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার জবাইকৃত চামড়া ২০ জন পারমিটধারী ও বেশকিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী সংগ্রহ করে থাকেন।
কিন্তু এবার চামড়া কেনার জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা মোটেও ছিল না। এবারের অবস্থা বেশ খারাপ। এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সেভাবে দেখাও যায়নি। যারা কোরবানি দিয়েছেন, তারা যেমন দাম পাননি, তেমনি দাম পাননি মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।
মৌসুমী ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম জানান, শহর-গ্রাম সবখানেই চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। এবার চামড়া কেনা হয়েছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। তিনি বলেন, ‘প্রতি কোরবানির ঈদে চামড়ার ব্যবসা করে থাকি। অতীতে এত সস্তায় চামড়া কেনাবেচা হয়নি।’
চামড়া বিক্রেতা বাবলু হোসেন জানান, কম দরে চামড়া বিক্রি হওয়ায় দরিদ্র, এতিম, মাদরাসা তাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এত কম দর হওয়ার কারণ হিসেবে আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন বিক্রেতারা।
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মনজুর হোসেন বলেন, ‘ট্যানারি মালিকরা বিশ্ব বাজারে মন্দার অজুহাত তুলে সিন্ডিকেট করে ফেলেছেন। গতবারের চামড়ার মূল্য পরিশোধ না করায় তারল্য সংকটের কারণে এবার বেশি দরে চামড়া কিনতে ঝূঁকি নিতে পারিনি।
তিনি জানান, ছোট চামড়ার দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মাঝারি আকারের চামড়া ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ও বড় চামড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় ক্রয় করেছেন। এছাড়া, খাসির চামড়া মাত্র ২০ থেকে ৩০ টাকায় ক্রয় করেছেন।
এদিকে, ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মাহবুবুর রহমান খান জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনা অনুযায়ী সীমান্ত দিয়ে চামড়া যাতে ভারতে পাচার না হয়, সেজন্য প্রতিটি বিওপিকে কড়া নজরদারি ও সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এমনকি কোন কোন সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব সীমান্তগুলো চিহ্নিত করে সে রুটগুলোতে অতিরিক্ত টহল জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।