প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন উত্তরাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষেরা। বাস-ট্রেনে দেখা যাচ্ছে ঢাকাগামী মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
শনিবারের (১৭ আগস্ট) মধ্যে অধিকাংশ মানুষের কর্মস্থলে হাজির হতে হবে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতের মধ্যেই পৌঁছাতে হবে যার যার আবাসস্থলে। এর ফলে সিট না পেয়ে বাস-ট্রেনের ছাদে ফিরছেন মানুষ। অনেকে আবার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ট্রাকে ফিরছে কর্মস্থলে। বাড়ি ফিরতে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়া মানুষগুলো কর্মস্থলে ফিরতে নিচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সরেজমিনে বগুড়ার বিভিন্ন বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন এবং মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনার চিত্র দেখা গেছে।
নওগাঁর মহাদেবপুর থেকে বাসের ছাদে বগুড়ায় এসেছেন শাহিন মিয়া। কাজ করেন ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায়। শনিবার সকালে তাকে কর্মস্থলে হাজির হতে হবে। তবে বগুড়ায় পৌঁছে ঢাকাগামী কোন বাসের টিকিট পাননি তিনি। তাই বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে উঠেছেন। শাহিন মিয়ার মত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সম্রাট তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ট্রাকযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বগুড়া থেকে।
একইদিন দুপুরে বগুড়া চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ১০ মিনিট পর পর ঢাকাগামী বিভিন্ন বাস ছাড়তে দেখা যায়। ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা (সিট) এবং দাঁড়িয়ে গেলে ২০০ টাকা। পাশাপাশি খালি ট্রাকগুলো জনপ্রতি ৩০০ টাকায় যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাচ্ছে।
শহরের ঠনঠনিয়ায় ঢাকা বাস টার্মিনালে শত শত যাত্রী ভিড় করে আছে ঢাকা যাওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত বাসের সংখ্যা অনেক কম। পরিবহন শ্রমিকদের অনেকে আবার কালোবাজারিতে টিকিট বিক্রি করছেন।
শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার তপন কুমার বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ১৬ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত যাত্রীর চাপ বেশি থাকবে। যদিও সেই তুলনায় বাসের সংখ্যা কম। একারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বগুড়া রেলস্টেশনে দেখা গেছে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেসে তিল ধারণের জায়গা নেই। বগুড়া স্টেশনে ট্রেনটি থামার সঙ্গেই শত শত নারী-পুরুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ছাদে ওঠার জন্য। ছাদে ওঠার জন্য স্টেশনে মই ভাড়ার ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয়রা। ১০ টাকার বিনিময়ে তারা বাঁশের মই দিয়ে যাত্রীদেরকে ট্রেনের ছাদে তুলে দিচ্ছেন।