অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় বগুড়ার কৃষকদের মধ্যে পেঁপে চাষে আগ্রহ বাড়ছে। অনেকেই ধানসহ অন্যান্য ফসলের চাষ ছেড়ে দিয়ে পেঁপে চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। বগুড়ায় চাষ করা পেঁপে স্থানীয়দের চাহিদা মেটানোর পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সরবরাহ করা হয়।
মূলত পেঁপে চাষের জন্য দোআঁশ মাটি বেশি উপযোগী। তাই জেলার উত্তর পূর্বাঞ্চলে পেঁপে চাষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সারা বছর ধরে পেঁপে বিক্রি হয়। এ কারণে এই অঞ্চলের কৃষকরা বাড়ির আশপাশে পতিত জমিতেও পেঁপের চারা রোপণ করেছেন।
জানা গেছে, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার চক সেকেন্দার গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া তার বাড়ি সংলগ্ন ভিটে জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করতেন। এ বছর তিনি ওই জমিতে ৩৮০টি পেঁপের চারা রোপণ করেছেন। এর মধ্যে ৮০টি চারা মারা গেছে।
বাদশা মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, গত জ্যৈষ্ঠ মাসে জমিতে চারা রোপণ করেছেন তিনি। তিন মাস পর থেকে পেঁপে ধরতে শুরু করেছে। আশ্বিন মাসের শেষের সময় থেকে ৬ মাস পেঁপে বিক্রি করবেন।
বাদশা মিয়া আরও জানান, ৬ মাসে তার এক বিঘা জমিতে খরচ হবে ২৫ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমি থেকে ৮০ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করবেন তিনি।
একই এলাকার নজরুল ইসলাম দেড় বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করে গত এক বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করেছেন। ওই এক বছরে জমিতে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, পেঁপে সাধারণত ১ বছরের ফসল হলেও পরের বছরও গাছ রাখা যায়। পরের বছর তেমন খরচ হয় না। তবে ফলন কমে যায় অর্ধেকে।
এদিকে বগুড়া জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কাঁচা পেঁপে সবজি হিসেবে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বগুড়ার সবচেয়ে বড় সবজির হাট মহাস্থান হাটে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাইকারি হিসেবে ১ মণ পেঁপে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মহাস্থান হাটের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, শীতকালে প্রতিদিন মহাস্থান হাট থেকে ১০-১২ ট্রাক পেঁপে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এখন উৎপাদন কম থাকায় প্রতিদিন ২-১ ট্রাক পেঁপে মহাস্থান হাট থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরই জেলায় পেঁপের চাষ বাড়ছে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় গ্রামের মানুষ বাড়ির উঠানেও পেঁপের চারা রোপণ করেন। এছাড়া পতিত জমিতেই পেঁপে চাষ করা হয়। জেলায় এ বছর ৮৭০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে। দিন দিন পেঁপে চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।