জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) নীলফামারীর জলঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু‘পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি মামলা দায়ের করা হয়।
আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দায়ের করা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার আলী মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেল, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর-১৭ তারিখঃ ১৫.৮.১৯ এবং ১৮ ও ১৯ তারিখঃ ১৬.০৮.১৯ইং।
এ ঘটনায় শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে জলঢাকা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন; মীরগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হেলালুজ্জামান হেলাল, সদস্য হারুন-অর রশিদ রাসেল, বালাগ্রাম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ইবনে নুর, আওয়ামী লীগ সমর্থক ইন্দ্রজিৎ রায়, ছাত্রলীগ কর্মী মিল্লাত হোসেন।
জলঢাকা থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'ঘটনার দিন একজন এবং শুক্রবার রাতে উভয় পক্ষের মামলায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঐ দিন দুপুর ও বিকালে দু’দফায় জলঢাকা পৌরশহরে বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৩ রাউন্ড টিয়ার শেল ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৫ আগস্ট শোক দিবসে সংঘর্ষের ঘটনায় ওই দিন রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনছার আলী মিন্টু বাদী হয়ে সাবেক এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাসহ ৭০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও শতাধিক লোককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অপর দিকে একই দিনে পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনছার আলি মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেলকে প্রধান করে নামীয় ৬৩ জন ও অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় সংর্ঘষের ঘটনায় জলঢাকা থানার এস আই মামুন-অর রশিদসহ পাঁচ জন পুলিশ সদস্য হামলার শিকার হয়ে আহত হলে এসআই আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করেন এবং আরো ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে দুপক্ষের সাথে বৈঠক করেছেন নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.মমতাজুল হকসহ জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা।
নীলফামারী জেলা সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, 'সমঝোতার জন্য দুই পক্ষের সাথে আলোচনা করছি। ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে স্থানীয় নেতাদের হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে।'