কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের শিবরাম গ্রাম। সেই গ্রামের হতদরিদ্র আব্দুল লতিফ চাষাবাদের মাধ্যমে ভাগ্যকে জয় করে নিয়েছেন। প্রথমে থাই পেয়ারা দিয়ে শুরু করলেও এখন রয়েছে তার মাল্টা, কমলা, থাই কুল, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের বাগান। আব্দুল লতিফকে দেখে তার গ্রামের অনেকেই গড়ে তুলছেন থাই পেয়ারার সাথে মিশ্র ফলের বাগান।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে সঙ্গে কথা হয় তার জীবন পাল্টে ফেলার গল্প নিয়ে।
লতিফ জানান, তিন বছর আগে ৪০০ থাই পেয়ারার চারা রংপুরের হর্টিকালচার নার্সারি থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে কিনে এনে তার নিজের বসতভিটার ৬০ শতক জমিতে বাগান করেন। প্রথম বছরে গাছ বড় হতে সময় লাগায় পেয়ারা ধরেনি। পরের বছর ২০১৮ সালে গাছে পেয়ারা ধরে। সে বছর ১১০ মণ পেয়ারা এক লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। চলতি বছর ২০১৯ সালে ২২০ মণ পেয়ারা ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
লতিফ এখন পেয়ারা বাগানের পাশাপাশি গড়ে তুলছেন মাল্টা, কমলা, থাই কুল, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের মিশ্র বাগান। তাকে অনুসরণ করে ঐ এলাকার অনেকেই এগিয়ে আসছেন ফল চাষে।
পেয়ারা চাষি আব্দুল লতিফ আরও জানান, তার বাগানে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে নিজের তৈরি ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করেন। তাই ফলন যেমন ভালো হয় তেমনি সুস্বাদু হওয়ায় তার বাগানে উৎপাদিত পেয়ারার বেশ চাহিদা বাজারে রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, আমি পেয়ারা চাষে সফলতা পেয়েছি। যদি কোনও কৃষক পেয়ারা চাষে উৎসাহিত হয়ে আমার কাছে আসে তাহলে আমি তাকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করব।
আব্দুল লতিফকে অনুসরণকারী কে এম রমজান আলী ও রফিকুল ইসলাম জানান, সবজি জাতীয় ফসলের চেয়ে কম খরচে থাই পেয়ারা চাষ করা যায়। এতে বেশি লাভ হওয়ায় পেয়ারার বাগান আমরাও তৈরি করছি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, কুড়িগ্রামের মাটি থাই পেয়ারাসহ মিশ্র ফল চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষি বিভাগ থাই পেয়ারার পাশাপাশি মিশ্র ফল বাগান তৈরি করতে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলছেন।