রেলস্টেশন কাউন্টারে কোনো টিকিট নেই। টিকিট নিতে হচ্ছে কালোবাজারিদের বাড়ি থেকে। এসির ৪২৬ টাকার টিকিট ১৫০০ ও ২২৫ টাকার চেয়ার টিকিট ১০০০ টাকায় বিক্রি করছে কালোবাজারিরা।
এমনই অভিযোগ করেন জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার দরিয়াবাদ গ্রামের গার্মেন্টসকর্মী সাজু মিয়া। ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলের দুটি আন্তঃনগর, একটি বেসরকারি (কমিউটার) ও সড়ক পথে কয়েকটি বাস চলাচল করছে।
আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯৭টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে কেবিন ৭টি, এসিচেয়ার ৩০টি, চেয়ায় ৬০টি, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৪০টি আসনের মধ্যে চেয়ার ১০টি, শোভন ১৩০টি আসন রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি কমিউটার ট্রেনের ঢাকা-৬০টি ও ময়মনসিংহের জন্য ১০টি আসন রয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনের ৫০ শতাংশ আসন অনলাইনে ও ৫০ শতাংশ লাইনে দাঁড়িয়ে দেয়া হয়।
জানা যায়, টিকেট কালোবাজারিরা আগে থেকেই তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে লাইনে দাড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করে রাখেন। পরবর্তীতে কালোবাজারিদের হাতে টিকেট তুলে দেন। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কালোবাজারি টিকেট বিক্রির ধরনও পাল্টিয়েছে। এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিভিন্ন স্পটে গিয়ে টিকেট পৌঁছে দেওয়া হয়।
মালমারা গ্রামের যাত্রী মাহমুদুল আক্ষেপ করে বলেন, কেমন দেশে বাস করি। সরকারি কাউন্টারে টিকিট নেই। কালোবাজারিদের কাছ থেকে পাঁচ গুণ বেশি দামে নিতে হয়।
তিনি আরও বলেন, কি করব পরিবার-পরিজন নিয়ে কর্মস্থলে যেতে তো হবেই। তাই বাধ্য হয়ে কালোবাজারিদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ বেসরকারি কমিউটার ট্রেনের টিকিটও অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বেসরকারি ট্রেনের ১০টি টিকিট কিনলে একটি সিট দেয়া হচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিকিট কালোবাজারি জানান, অতিরিক্ত টাকা শুধু আমরাই পাই না। এর সঙ্গে অনেকে জড়িত রয়েছে। ইসলামপুর রেলস্টেশনে গিয়ে স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমানকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সড়ক পথেও একই অবস্থা। রাজিব, এসকে, জননী, রংধনু ও শেরপুর ট্রাভেলসহ প্রায় ১০টি বাস চলাচল করছে এ রুটে। এসব বাস কাউন্টারে ৩০০ টাকার টিকিট ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। সিএনজির ভাড়া ইসলামপুর-জামালপুর রোডে ৬০ টাকার স্থলে ১০০টাকা মাথাপিছু ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছে।
এ ব্যাপারে ইউএনও মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আমি ব্যবস্থা নেব।