আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার কৃষকরা। ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কোনও জমি পড়ে নেই। কেউ সবজি বীজ বপন করছেন, কেউবা জমি তৈরিতে ব্যস্ত। আবার যারা দুই সপ্তাহ আগে বীজ বপন করেছেন তারা জমি নিড়ানি দিচ্ছেন ভাদ্র মাসের কাঠ ফাটা রোদে।
রোদে পুড়ে কৃষকের কষ্টে ফলানো এই আগাম সবজি সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে বাজারে বিক্রি শুরু হবে। এ সময়টাতে সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়, এতে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা কৃষকদের ।
কম সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, টমোটো, মুলাসহ বিভিন্ন শাকসবজির চারা ও বীজ বপন শুরু করেছেন।
বগুড়ার জেলার ১২ উপজেলাতেই কমবেশী সবজি চাষ হলেও উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে দোঁআশ মাটিতে আগাম সবজি চাষ বেশী হয়ে থাকে। কৃষক আগাম সবজি বিক্রির পর ওই জমিতে আলু চাষ করবেন।
শিবগঞ্জ উপজেলার মেদেনীপাড়া গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান ৩৪ শতাংশ জমিতে গত বছর আগাম ফুলকপি চাষ করে বিক্রি করেছেন ৬০ হাজার টাকা। তার খরচ হয়েছিল ১৮ হাজার টাকা। এ কারণে এবারও তিনি শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি ফুলকপির চারা রোপণ করেছেন। মিজানুর রহমান ছাড়াও ওই এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও আগাম জাতের ফুলকপি,বাঁধাকপি ও মুলা চাষ শুরু করেছেন।
বগুড়া সদরের বাড়ইপাড়া গ্রামের কৃষক মনছের আলী অন্যের ২০ শতাংশ জমি পত্তন নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে মুলা বীজ বপন করেছেন। এই জমি থেকে তিনি ৪০ মণ মুলা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। এই এলাকার কৃষক ফজলুর রহমান, আইনুর ইসলামও মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন শীতকালীন আগাম সবজি চাষে।
শাখারিয়া গ্রামের ৮৭ বছর বয়সী কৃষক গোলাম গোফ্ফার মন্ডল একজন শ্রমিক নিয়ে লাল শাকের জমি নিড়ানি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ পর থেকেই লাল শাক বিক্রি করবেন। লাল শাক বিক্রি শেষে জমিতে মুলার বীজ বপন করবেন।
তিনি বলেন, ধান চাষে প্রতি বছরই লোকসান হচ্ছে। এ কারণে তারা সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। সবজি চাষে লোকসান হওয়ার সম্ভবনা খুব কম।