হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পুরান পাথাড়িয়া গ্রামের আলোচিত তিন খুনের ঘটনার ২১ বছর পর পৃথক রায়ে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম নাসিম রেজা এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত পরিদর্শক মো. আল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পুরান পাথাড়িয়া গ্রামের হাজী ইসমাইলের ছেলে করম আলী, মৃত হেলিম উল্লাহর ছেলে আলী মোহাম্মদ, আব্দুল হাশিমের ছেলে সুরুজ আলী ও মৃ সঞ্জব আলী তুরাব আলী।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এলাকায় পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় শাহেদ আলী ও আলী আহম্মদের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শাহেদ আলীর পক্ষের সামছুল হক ও আফিল উদ্দিন এবং আলী আহমদ পক্ষের নূর মোহাম্মদ নিহত এবং উভয়পক্ষে শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হন।
নূর মোহাম্মদ খুনের ঘটনায় তার ভাই আলী আহম্মদ বাদী হয়ে ওইদিনই বানিয়াচং থানায় ১৩০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বানিয়াচং থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমরেন্দ্র বিশ্বাস ১৯৯৯ সালের ১১ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ১১ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিজ্ঞ আদালত করম আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেখসুর খালাস দেওয়া হয়।
এদিকে, অপরপক্ষে দুইজন নিহতের ঘটনায় নিহতদের আত্মীয় আতিকুন্নেছা ঘটনার দিন বাদী হয়ে ৬২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায়ও উপপরিদর্শক (এসআই) অমরেন্দ্র বিশ্বাস ১৯৯৯ সালের ১১ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করলে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিজ্ঞ আদালত আসামি আলী মোহাম্মদ, সুরুজ আলী ও তুরাব আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
আলোচিত এই দুই মামলায় প্রায় ২০০ আসামি থাকায় এবং তাদের স্বজনদের উপস্থিতির কারণে আদালত প্রাঙ্গণে ব্যাপক ভিড় পরিলক্ষিত হয়। আদালতের কাঠগড়ায় একসাথে সবার জায়গা না হলে এজলাশ পুরোটাই জনাকির্ণ হয়ে পড়ে।
আদালত পরিদর্শক মো. আল আমিন বলেন, ‘রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’