লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে যৌতুকের দাবিতে কুলছুমা আক্তার নামে এক গৃহবধূর চোখের পর্দার উপরে ও বুকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় গৃহবধূকে পিঁড়ি ও লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গৃহবধূর মা কাঞ্চনী বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- গৃহবধূর স্বামী ফয়সাল হোসেন, দেবর মনুহার, শাশুড়ি আলেয়া বেগম, ননদ পিনু আক্তার ও দেবরের স্ত্রী পলি আক্তার। তারা রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চরবগা গ্রামের বাসিন্দা।
বাদীর আইনজীবী আনোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, 'জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক মো. শাহেনূর মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এটি তদন্তের জন্য রায়পুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১২ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য বলা হয়।'
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূ কুলছুমা আক্তার রায়পুর উপজেলার পশ্চিম চরপাতা গ্রামের আবদুল হক ও কাঞ্চনী বেগমের মেয়ে। ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট সোনাপুরের চরবগা গ্রামের মৃত সফিক উল্যার ছেলে ফয়সালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর বিদেশ যাওয়ার কথা বলে কুলছুমাদের বাড়ি থেকে ফয়সাল দেড় লাখ টাকা ধার নেয়। কিন্তু তিনি বিদেশ না গিয়ে স্ত্রীর স্বর্ণালংকার ও দেড় লাখ টাকা আড্ডা দিয়ে খরচ করে ফেলেন।
গত ৮ আগস্ট ফের এক লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দিতে বললে কুলছুমা রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফয়সালসহ উল্লেখিত আসামিরা লাঠিসোটা, পিঁড়ি দিয়ে কুলছুমাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ সময় পিঁড়ির আঘাতে তার মাথা ফেটে যায়। একপর্যায়ে সিগারেটের আগুন দিয়ে তার (কুলছুমা) বাম চোখের উপরে, ডান চোখের কোনায় এবং বুকের মাঝখানে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এছাড়াও ব্লেড দিয়ে তার ডান হাতের আঙ্গুলের মাথা কেটে জখম করা হয়। পরে চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে।
এর আগে এই ঘটনায় ৯ আগস্ট গৃহবধূর মা কাঞ্চনী বেগম বাদী হয়ে রায়পুর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন।