ভোলার মনপুরা উপজেলায় বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘর থেকে বের হতে পারছে না মানুষ।বাড়ছে জনদুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ। এলাকাবাসীর দাবি, নতুন বেড়িবাঁধ তৈরি করার ফলে কয়েকটি খাল বন্ধ হয়ে গেছে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত কিছু স্লুইজ বাঁধের বাইরে পড়ে যাওয়ায় এ জলাবদ্ধতা। অন্যদিকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মনপুরা উপজেলার সোনারচর, চর যতিন, চর জ্ঞান, কাউয়ারটেক, দাসের হাট, মাস্টারের হাটসহ অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম বৃষ্টি হলে আর চেনা যায় না। বৃষ্টির পানি গ্রামগুলোকে হাওর-বাওর কিংবা নদীতে পরিণত করে। খাল-বিল, ডোবা-নালা দিয়ে পানি নদীতে নামতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে।
এমনিতেই মনপুরার মানুষ সব সময় প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকে। এ বছর তাদের সামনে নতুন করে দেখা দিয়েছে প্রকৃতির আরেক অভিশাপ জলাবদ্ধতা। কয়দিন পর পরই ভারি বৃষ্টি হচ্ছে আর মনপুরার মানুষ জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিঘ্নিত হচ্ছে লেখা-পড়াও। জলাবদ্ধতার কারণে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। চাষাবাদ করতে পারছেন না। ভেসে যাচ্ছে পুকুরের মাছ। ভোলা মনপুরার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নানা শ্রেণি পেশার মানুষদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ আরাফাত বলেন, কয়েক দিন ধইরা আমাদের স্কুলের চারপাশে পানি জমছে, স্কুলে যেতে পারিনা। ক্লাস রুমে পানি, ক্লাসে বসতে পারিনা, পড়া-লেখা হচ্ছেনা।
সোনার চর এলাকার সামিম বলেন, মনপুরার চতুর পাশে, বিশেষ করে আমাদের এই এলাকায় প্রত্যেকটা জায়গায় খাল বন্ধ করা আছে। খালের মধ্যে যে স্লুইজ গেট ছিলো সেটা এখন বেড়ির বাইরে পরে গেছে।পানি যাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।
ভূক্তভোগী মোসলেউদ্দিন মুসা বলেন, আমাদের বাড়ি থেকে আমরা বের হতে পারি না। পুকুরের মাছ চলে যাচ্ছে। এই পানি যদি খুব দ্রুত না সরানো হয় চাষাবাদ করতে পারব না।
দাসের হাটের নিরব বলেন, পানি যদি দ্রুত সরানোর না হয়, তাহলে আমরা বিশাল সমস্যায় পইড়া যামু।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কাইছার আলম জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পুরোনো স্লুইজ গেটগুলো সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া নতুন কিছু স্লুইজ গেট নির্মাণেরও পরিকল্পনা আছে। আপাতত পাইপের মাধ্যমে পানি সরানো হচ্ছে।