বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বগুড়ার ৬ উপজেলার কৃষকরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। মাত্র এক মাস আগে তাদের ধান, পাট, মরিচসহ গ্রীষ্মকালীন সবজি বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সেই জমিতে দেরিতে হলেও রোপা আমন চাষ করে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কেউ ঘরে বসে নেই। কেউ জমি তৈরি করছেন। কেউবা চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর জমি নরম থাকায় তাদের বাড়তি সেচ প্রয়োজন হচ্ছে না। তবে চারা রোপণে দেরি হওয়ায় ফলন কম এবং রবি শস্য চাষে ব্যাঘাত হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
সোনাতলা উপজেলার দড়িহাঁসরাজ গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম জানান, তার আড়াই বিঘা জমিতে লাগানো রোপা ধানের চারা এক মাস আগে বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে যায়। এখন পানি নেমে যাওয়ার পর সেই জমিতে আবারো চারা রোপণ করছেন।
তিনি জানান, আর কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি নতুন ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
বন্যায় যমুনা এবং বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ব বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট, শেরপুর, গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বোরো চাষে লোকসানের পর গ্রীষ্মকালীন সবজি, পাট, মরিচ, আউশ ধান তারা ঘরে তুলতে পারেননি। এসব ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য তারা আমন চাষ যোগ্য কোনো জমি ফেলে রাখছেন না।
গাবতলী উপজেলার দক্ষিণ সরাতলি গ্রামের কৃষক আব্দুল গফ্ফার জানান, বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধিতে তার আগাম রোপণ করা আমন ধানের চারা এবং মরিচ নষ্ট হয়ে যায়। পানি নেমে যাওয়ার পরে দেরিতে হলেও আবারো আমন চারা রোপণ করছেন। বন্যার কারণে এ অঞ্চলের দুই হাজার ৩৫৭ হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষকদেরকে চড়া দামে রোপা আমনের চারা কিনতে হচ্ছে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২ উপজেলায় এক লাখ ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বন্যার কারণে চারা রোপণ কিছুটা পিছিয়ে গেলেও ভাদ্র মাসের মধ্যে সব এলাকাতেই চারা রোপণ শেষ হবে।