অর্থকরি ফসল কলা চাষে ঝুঁকছেন বগুড়ার কৃষকরা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কলা চাষে খরচ কম ও মুনাফা বেশি হওয়ায় প্রতি বছরই কলা চাষ বাড়ছে।
জেলার সব উপজেলাতেই কম বেশি কলা চাষ হলেও দোঁ-আশ মাটি ও উঁচু জমিতে ফলন ভালো হয়। এ কারণে জেলার সদর, গাবতলী ও শিবগঞ্জ উপজেলাতেই কলা চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। এ বছর জেলায় ৪৮৩ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হয়েছে।
এদিকে, তিন উপজেলার সিমান্ত এলাকা চন্ডিহারা নামক স্থানে বগুড়া রংপুর মহাসড়কের দু’পাশে গড়ে উঠেছে কলার পাইকারি হাট। বগুড়ায় চাষ করা কলা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁদনীয়া শিবগঞ্জ গ্রামের কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে এক বছর আগে এক হাজার কলা গাছের চারা রোপণ করেছেন। দুই সপ্তাহ পর থেকে তিনি কলা বিক্রি শুরু করবেন। এক বছরে তার খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। তিন বিঘা জমির কলা বিক্রি হবে তিন লাখ টাকার বেশি।
উথলী গ্রামের কৃষক শতীশ চন্দ্র মোদক আড়াই বিঘা জমিতে গত বছর অগ্রহায়ণ মাসে আলুর পাশাপাশি ৭৫০টি কলা গাছের চারা রোপণ করেন। তিনি এ পর্যন্ত খরচ করেছেন ৪০ হাজার টাকা। আরও ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। দুইমাস পর তিনি কলা বিক্রি করে ওই জমিতে আবারও আলু রোপণ করবেন।
কৃষকরা জানান, কলা চাষে পুরো এক বছর সময় লাগায় অনেকেই কলা চাষ করতে চান না। তবে গত ২-৩ বছর ধরে ভালো দাম পাওয়ায় কলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এই এলাকায় অনুপম এবং চাম্পা কলার চাষ হয় বেশি।
মোকামতলার চৌকির ঘাট এলাকার কলা ব্যবসায়ী হারুনার রশিদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমি মহাসড়কের পাশে ঘর নিয়ে ১২ বছর ধরে কলার ব্যবসা করছি। কয়েক বছর ধরে কলার ব্যবসা লাভজনক। বিভিন্ন বাগান ঘুরে কাঁদি প্রতি ৩০০-৫০০ টাকায় কলা কিনি। আধাপাকা হলে সেই কলা বগুড়া শহরে সরবরাহ করি।’
শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া এলাকার বেলাল হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘৩০ বছর ধরে কলার ব্যবসা করছি। চন্ডিহারা হাট থেকে কলা কিনে ট্রাক যোগে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। শনিবার, বুধবার কলার হাট বসে। প্রতি হাটে ২৫-৩০ ট্রাক কলা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করতে হয়। চন্ডিহারা হাটে অনুপম কলার কাঁদি ৩৫০-৫০০ টাকা এবং চাম্পা কলার কাঁদি ২৫০ -৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়।’