পাবনায় গৃহবধূকে গণধর্ষণ, থানায় মামলা না নেওয়া ও থানার মধ্যেই ধর্ষিতার সঙ্গে ধর্ষকের বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবনে মিজান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিকেল পৌনে ৫টায় পুলিশ সদর দফতর থেকে ওসি ওবাইদুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এমন এক ফ্যাক্স বার্তা পাওয়া গেছে।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, সদর থানার ওসি ওবাইদুল হককে পুলিশ সদর দফতর থেকে সাময়িক বরখাস্তের পর চট্টগ্রামে বদলি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২৯ আগস্ট পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর যশোদল গ্রামের গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয়। পরে ধর্ষিতা থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ অজ্ঞাত কারণে মামলা না দিয়ে উল্টো গণধর্ষণের শিকার ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষককে (৬ সেপ্টেম্বর) থানার মধ্যেই বিয়ে দেন। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। গঠিত তদন্ত কমিটি এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে ৫ জনকে আসামি করে ৭ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করা হয়। পৃথক অভিযানে পুলিশ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করেন। একই সঙ্গে পাবনা সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। আর এক উপপরিদর্শককে (এসআই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিষয়টি হাইকোর্ট দৃষ্টি রাখায় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে এবং সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ডেপুটি সিভিল সার্জনকে সদস্য করা হয়। তিনদিনের পুরো ঘটনা তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে প্রেরণ করেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় গৃহবধূ গণধর্ষণ: ওসি প্রত্যাহার, এসআই সাময়িক বরখাস্ত
এদিকে গণধর্ষণের মামলায় আসামিদের মধ্যে প্রভাবশালী আসামি হলেন পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টু। তাকেও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।