পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রামনাবাদ চ্যানেলে নির্মিত হচ্ছে দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দর। এই বন্দরকে কেন্দ্র করে সরকার গড়ে তুলছে একাধিক কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে কয়লা সংগ্রহ করা হবে। এসব কয়লা সরাসরি পায়রা সমুদ্রবন্দরের তত্ত্বাবধানে
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছে যাবে।
২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পয়ারা সমুদ্র বন্দরে সীমিত পরিসরে অপারেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ পর্যন্ত বন্দরের বহির্নোঙরে ৩৪টি বিদেশি জাহাজ অপারেশনাল কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।
এদিকে পায়রা বন্দরের আশপাশে সরকার একাধিক কয়লাভিত্তিক তাপবিদুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করায় এই বন্দরটি কয়লা পরিবহনে সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হবে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মাওলা বলেন, '১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। প্রথম ইউনিট চালু করলে প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ছয় হাজার টন কয়লা। এরই ধারাবাহিকতায় কয়লার প্রথম চালানটি সরাসরি ইন্দোনেশিয়া থেকে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে জাহাজের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয়েছে। এই কয়লা সরাসরি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে কয়লার ডোমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কয়লা ব্যবহার করেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন, তা সম্পন্ন করা হবে।'
পায়রা সমুদ্র বন্দরের হার্বার অ্যান্ড মেরিন সদস্য কমোডর এম সাইদুর রহমান বলেন, 'যেকোনো এলাকার উন্নয়নের জন্য বন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সে অনুযায়ী এই এলাকায় একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে সে অনুযায়ী প্রথম কোনো কয়লাবাহী জাহাজ সরাসরি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে এসেছে। ২০১৬ সালে যে স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল তা এখন পুর্ণাঙ্গ রূপ পেল।'
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার জাহাজ পৌঁছে দিতে সমস্ত কার্যক্রম পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সম্পন্ন করেছে। পাইলটিং থেকে শুরু করে সিএনএফ এজে, শিপিং এজেন্ট, কাস্টমস থেকে শুরু করে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে এই কয়লা পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে পৌঁছে দেওয়া হলো। আশা করা হচ্ছে, ২০২০ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন একটি করে কয়লার জাহাজ আসবে।
বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খুরশেদুল আলম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন সুষম উন্নয়ন। আর সে উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে দক্ষিণ উপকূলও সংযুক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর একটি স্বপ্ন ছিল এই অবহেলিত এলাকার উন্নয়ন, সেটা প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ আমরা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট যথা সময়ে সময়ে চালু করতে পারব।'
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ইন্দোনেশিয়ার বালিকপানান বন্দর থেকে ২০ হাজার টন কয়লা নিয়ে হংকংয়ের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জিং হাই টং পায়রা তাপবিদুৎ কেন্দ্রের জেটিতে নোঙর করে।